পঞ্চগড়ের বিভিন্ন কবরস্থান থেকে প্রায়ই কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলার আটোয়ারী-বোদা পৌরসভার সাতখামার ঝলঝলি গোরস্থান থেকে ১২টি কঙ্কাল চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গোরস্থানে চোরদের ফেলে যাওয়া পরণের কাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

স্থানীয়দের ধারণা- কঙ্কাল চুরির পর কবরস্থান লাগোয়া জলাশয়ে গোসল করে পুরোনো কাপড় ফেলে রেখে পরিষ্কার কাপড় পরে কঙ্কালগুলো নিয়ে চলে গেছে চোরেরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও বোদা পৌরসভার মেয়রসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ঝলঝলি গোরস্থানে বিভিন্ন কবরের পাশে কিছু কুকুর ঘোরাফেরা করতে দেখেন কয়েকজন। এতে তাদের সন্দেহ হয়। পরে গোরস্থানে ছুটে গিয়ে কয়েকটি কবরের মাটি ও বাঁশ এলোমেলো থাকতে দেখেন তারা। কবরে উঁকি দিয়ে দেখতে পান কবর ফাঁকা। মুহূর্তের মধ্যে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা জমায়েত হতে থাকেন গোরস্থানে। খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজনরাও ছুটে এসে দেখেন তাদের স্বজনের কবর ফাঁকা। কবরস্থান থেকে ১২টি কঙ্কাল চুরির প্রাথমিক তথ্য মেলে।

কবরগুলোর মধ্যে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলেমান আলীর কবরও রয়েছে। পরে ফাঁকা থাকা কবরগুলো মৃতের স্বজনরা মাটিচাপা দিয়ে ঢেকে দেন। মৃতের স্বজনরা বলেন, গোরস্থান থেকে প্রতিনিয়ত কঙ্কাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। দুর্বৃত্তরা এ কঙ্কাল চুরি করে কী করছে তা জানি না। এটাতো হতে দেওয়া যায় না। এ জন্য তারা কবরস্থানের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

এ দিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে জেলার বোদা উপজেলার পরপর দুই কবরস্থানে ২৬টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ীর ইউপির সরকারপাড়া গ্রামের একটি পুরাতন কবরস্থান থেকে ১২টি ও একই উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের কইকিল্লা কবরস্থান থেকে ১৪টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছিল। 

আটোয়ারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে জানান, আটোয়ারী-বোদা পৌরসভার সাতখামার ঝলঝলি গোরস্থান থেকে ৯টি কবরের ভেতর ৭টি কবর থেকে লাশের হাড়গোড় চুরির ঘটনা ঘটেছে। সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের সন্ধানে কাজ করছে পুলিশ।

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মসফিকুল আলম হালিম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখানকার স্থানীয়দের জিডি করাসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

আরএআর