নির্মাণের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ভোলা জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সাত তলা ভবনটি চালু হয়নি। দীর্ঘদিন সেখানে অযত্ন অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে চিকিৎসার যন্ত্রপাতিসহ কোটি টাকার সম্পদ। পুরোনো ভবনে শয্যা সংকটসহ নানা সমস্যায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। নতুন ভবনটি কবে চালু হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলতে না পারলেও শিগগিরই চালুর আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

জানা গেছে, ২০১৩ সালের মে মাসে ৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সাত তলা ভবনের নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত বিভাগ। ভবনটিতে আইসিইউ, সেন্ট্রাল অক্সিজেন, মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম, লিফট ও সিসি ক্যামেরাসহ চিকিৎসাসেবার সব রকমের আধুনিক সুবিধা রয়েছে। 

কিন্তু তিন বছরেও ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন বা চালু না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা চিকিৎসা সরঞ্জাম, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মেশিন ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতিসহ সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভবনের প্রতিটি তলা ও কক্ষে ময়লা আবর্জনা আর ধুলাবালির আস্তর জমেছে। 

এদিকে ২৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও বর্তমানে হাসপাতালটির কার্যক্রম চলছে পুরোনো ১০০ শয্যা ভবনে। ফলে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী থাকায় শয্যা সংকটে অনেকে মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। ডাক্তার ও নার্সসহ জনবল সংকটে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

নবনির্মিত আধুনিক ভবনটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হলে জেলার ৭ উপজেলার মানুষকে চিকিৎসাসেবার জন্য আর ঢাকা কিংবা বরিশাল যেতে হবে না। ভোলাতেই তারা সঠিক চিকিৎসাসেবা পাবেন। 

রোগীর স্বজন মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ভোলায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট যে হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে বেডের অভাবে আমাদের নিচে বিছানা করতে হয়। অথচ এর পাশেই একটি আধুনিক সাত তলা ভবন, যেখানে অক্সিজেন আইসিইউ-সিসিইউসহ সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এই ভবনটি চালু হলে আমাদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

ভবনটি উদ্বোধনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে উল্লেখ করে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জনবল ও খাবারের অনুমোদন পেলেই আধুনিক ভবনটি উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বিলম্ব হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ভবনটি উদ্বোধনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটি উদ্বোধন করা হবে।

আরএআর