মামলার এজাহারে কিংবা কোনো নথিপত্রে তার নাম নেই। অথচ তিনি মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে ১৩ দিন কারাভোগ করেছেন। ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের কাতার প্রবাসী শিপন মিয়াকে (৩২) হয়রানি করা হয়েছে। 

মানবপাচারের মামলায় ভুয়া ওয়ারেন্টে ১৩ দিন কারাবাস করে গত ৬ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। মৌলভীবাজার ৫নং আমলি আদালতের বিচারক তাকে জামিন দেন। 

আদালত জানান, যে ওয়ারেন্টে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই মামলাই ছিল ভুয়া। পুলিশের কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের ফলে তাকে কারাবাস করতে হয়েছে। 

প্রবাসী মো. শিপন মিয়া বলেন, বিয়ের ১০ দিন পর পুলিশ ভুয়া ওয়ারেন্ট নিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করে। কুলাউড়া থানার ওসিকে অনেক অনুরোধ করেছিলাম বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আমাকে গ্রেপ্তার করার জন্য। তিনি আমাকে সময় না দিয়ে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। এতে আমি সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম সিরাজী জানান, সদ্য দেশে আসা কাতার প্রবাসী মো. শিপন মিয়াকে কুলাউড়া থানা পুলিশ গত ২৬ আগস্ট গ্রেপ্তার করে। যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন সেই মামলার এজাহার, এফআইআর ও চার্জশিটে আসামির নাম ও ঠিকানা নেই। সংশ্লিষ্ট মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল সিলেট আদালতে খোঁজ নিয়ে এ ধরনের কোনো মামলার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ভুয়া দুটি মামলা দেখানো হয়েছে। প্রত্যেকটার সার্চিং স্লিপ উত্তোলন করে এনেছি। যারা ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের উচিত ছিল ওয়ারেন্টের সত্যতা যাচাই করে আসামিকে গ্রেপ্তার করা। এখন পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ষড়যন্ত্রকারীরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। যাতে আর কোনো নিরাপরাধী এভাবে ভুয়া ওয়ারেন্টে জেল না খাটে। 

এ বিষয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক জানান, বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট সংশ্লিষ্ট থানায় আসে। এখানে যাছাই করার সুযোগ থাকে না। বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা প্রয়োজন। 

ওমর ফারুক নাঈম/আরএআর