রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গঙ্গাচড়া বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ওসিসহ ২০ জন পুলিশ সদস্য ও অর্ধ শতজন আহত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা সদরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘর্ষ বাধলে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রায় ৫০ রাউন্ড রাবার বুলেট, লাঠিচার্জ ও বেশকিছু টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে বলে জানা গেছে।

সংঘর্ষে পুলিশের এসআই সালামসহ পাঁচ পুলিশ, দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি সুজন আহমেদ মানবজমিনের প্রতিনিধি আব্দুল বারী স্বপনসহ চার সাংবাদিক এবং অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন।

আহতদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান মাবু ও সাধারণ সম্পাদক আখিরুজ্জামান শিরন, রংপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহা, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন লিজু গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন হত্যাসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে গঙ্গাচড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় স্থানীয় বিএনপি। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে উপজেলার পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড় এলাকায় জড়ো হতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এরপর বিকেল পাঁচটার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি গঙ্গাচড়া বাজারের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের লাঠিচার্জ করে।

এদিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপে গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেনসহ ২০ পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক এবং লাঠিচার্জে বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি বেসামাল হলে টিয়ারশেল ছুড়ে বিএনপির বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ ।

এ বিষয়ে রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গঙ্গাচড়া বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থানার ওসিসহ ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় ৫০ রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনো কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাবুর অভিযোগ করে বলেন, বুধবার ওসির সঙ্গে কথা হয়েছিল, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করব। কিন্তু সমাবেশ চলাকালে পুলিশ অতর্কিত হামলা করেছে। আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও যুবদল নেতা রাশেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান তিনি।

ফারুক/এমএএস