সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় তাপস মন্ডল (১৪) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে চাইলে ব্যর্থ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সাভারের তালবাগ এলাকার সাভার সেন্ট্রাল হাসপাতালে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন পুশ করার প্রায় দুই ঘণ্টা পর সে মারা যায়।

তাপস গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার কান্দাপাড়া গ্রামের শশী মন্ডলের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত।

তার স্বজনরা জানায়, শুক্রবার বিকেলে ফুটবল খেলতে গিয়ে হাতের হাড় ভেঙে যায় তাপসের। পরে তাকে নিয়ে স্থানীয় ফার্মেসি ব্যবসায়ী আবুলের কাছে গেলে তিনি সাভারের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী সাভারের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৩৫ হাজার টাকা চুক্তিতে হাতের অপারেশন করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে শনিবার রাত ১০টার দিকে অপারেশনের জন্য অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন পুশ করলে তাপস অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর সে মারা যায়। 

নিহতের মামা উত্তম কুমার বলেন, আমার ভাগনের ফুটবল খেলতে গিয়ে হাত ভেঙে যায়। হাতের অপারেশন করলে মানুষ মারা যায় কীভাবে? কালিয়াকৈরের পার্শ্ববর্তী থানা ধামরাইয়ের আইঙ্গন বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী আবুল এই হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়। আমাদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া হলে আমরা পঙ্গু হাসপাতালে নিতাম। তাহলে হয়তো আমার ভাগনে বেঁচে থাকত। আর ডাক্তার আসার আগেই রাত ১০টার দিকে তাকে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেওয়া হয়। পরে রাত ১ টার দিকে অপারেশনের ডাক্তার আসলে তিনি বলেন, অপারেশন করা যাবে না, সমস্যা আছে। পরে ডাক্তার চলে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, আইসিইউতে নিতে হবে। পরে তাপসের অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সাভারের সুপার ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানেই তাপস মারা যায়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাপসের বাবা শশী মন্ডল বলেন, আমার ছেলে আমার কাছে যা চাইত, কষ্ট হলেও দিতাম। কোনো কাজ করতে দিতাম না। বলতাম তুই শুধু লেখাপড়া কর। আমার আদরের ছেলেটাকে ওরা ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলল। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

সাভার সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. অহিদ বলেন, আমি হাসপাতালে ছিলাম না। এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন দিয়েছেন ডা. কামরুজ্জামান। তাকে সুপার ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হলো কেন এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

মাহিদুল মাহিদ/এসপি