বেতন পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার দুই বছর পর বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) উদ্যোগে সমস্ত পাওনাদি পাচ্ছেন শ্রমিকরা। গত বছর বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার শাইন ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সাভারে ঢাকা ইপিজেডের অডিটোরিয়ামে বন্ধ হওয়া শাইন ফ্যাশন লিমিটেডের ২ হাজার ৮৩ জন শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এ সময় ওই কারখানার ১০ শ্রমিকের হাতে পে-অর্ডার তুলে দেওয়া হয়। তাদেরকে ২ থেকে ৩ মাসের বকেয়া বেতনসহ টার্মিনেশন বেনেফিট দেওয়া হয়। 

বেপজার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সোবহান বলেন, ইন্দোনেশিয়ান প্রতিষ্ঠান শাইন ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানা ডিইপিজেডের পুরাতন জোনে উৎপাদন করে আসছিল। কিন্তু ২০২০ সালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় ২ হাজার ৮৩ জন শ্রমিক ও কর্মকর্তার পাওনাদি বকেয়া ছিল। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে নিলামের মাধ্যমে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ডি টেক্সটাইলস লিমিটেডের কাছে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় কারখানাটি বিক্রি করা হয়। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনাদি প্রায় ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেয় ডিইপিজেড। শ্রমিকদের তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই বকেয়া পরিশোধ করা হচ্ছে। যেসকল শ্রমিকের কাগজপত্র বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সমস্যা হচ্ছে তারা কাগজপত্র ঠিক করে নিয়ে আসলে তাদের টাকাও পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এই একই কোম্পানির অপর প্রতিষ্ঠান অ্যাভান্ট-গার্ড ফ্যাশন লিমিটেডেরও ১১০০ শ্রমিকের পাওনা বাকি ছিল। বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এই বকেয়া টাকাগুলোও আগামী রোববার শ্রমিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

দীর্ঘদিন পর শ্রমের টাকা ফেরত পেয়ে কারখানার সুইং অপারেটর জোসনা বলেন, আমরা আমাদের শ্রমের এই মজুরি ফেরত পাব এমন আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বেপজা তার কথা রেখেছে। তারা বার বার বলেছিল আমরা টাকা পাব। আজ টাকাটা হাতে পাব। এত টাকা একবারে কখনো হাতে পাইনি। এখন আমাদের একটা পথ হবে।

বেপজার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সোবহান উপস্থিত থেকে প্রাথমিকভাবে ১০ জনের হাতে এই পে-অর্ডার তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেপজার অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম। আজ ১ হাজার ৯৩৬ জন  শ্রমিকের পাওনা ২৯ কোটি টাকা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছে বেপজা।

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর