নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই অভিযোগপত্র জমা দেন তিনি। পরে বিকেলে শহরের নীল প্রতিভা পাড়ার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে করেন।

অভিযোগে বলা হয়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আসাদুজ্জামান নূর তার নির্বাচনী এলাকাসহ জেলার সব উপজেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছেন। এসব সভায় নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বলছেন। যা জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালার পরিপন্থী। এটি আমার নির্বাচনী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার প্রত্যক্ষ কর্মসূচি ।

তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ২২ নং ধারার (১) অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচনের আগে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

তবে আসাদুজ্জামান নূর সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে এবং সরকারি প্রোটোকল হিসাবে পুলিশের দুইটি গাড়িসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের গাড়ি বহর নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় এবং জেলার অন্য পাঁচ উপজেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটারদের নিয়ে মত বিনিময় সভা করছেন।

জয়নাল আবেদীন বলেন, সভায় জোর দাবি করে ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর জন্য। এছাড়াও ভোটারদের কাছে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ করার দায়ভার গ্রহণ করছেন স্বয়ং সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। তার এসব কর্মসূচি একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে আমার নির্বাচনী কার্যক্রমকে সরাসরি বাধাগ্রস্ত করছে। ভবিষ্যতে তিনি আমার স্বাভাবিক নির্বাচনের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছি।

তবে অভিযোগের বিষয়ে নীলফামারী-২ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, জেলার উন্নয়ন তরান্বিত করার জন্য আমি সভা করছি। এগুলো নির্বাচনী সভা নয়।

জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেটি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তবে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ হবে এটা আমরা কথা দিচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদীয় আসনের নির্বাচনী এলাকার বাইরে জেলার জলঢাকা, ডোমার, সৈয়দপুরে উপজেলা ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় সভা করেন সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী ও নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।

আগামী ১৭ অক্টোবর নীলফামারী জেলা পরিষদ নির্বচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচন করা হবে এ ভোটের মাধ্যমে। এ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন কেবল ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা,ও উপজেলা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।

শরিফুল ইসলাম/এমএইচএস