চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্রের ব্যাংক ড্রাফটসহ কাগজপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনে এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দুরুল হোদা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে মনোনয়নপত্র না দিয়েই ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। 

জেলা নির্বাচন অফিসের নিচ তলায় বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীর ব্যাংক ড্রাফটসহ পুরো ফাইল। 

হামলার শিকার দুরুল হোদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়ন ফরম নিতে গেলে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। 

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দুরুল হোদা অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ২টার দিকে আমি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র নেওয়ার জন্য জেলা নির্বাচন অফিসে যাই। অফিসে প্রবেশ পথে সিঁড়ির কাছে আমাকে সন্ত্রাসীরা বাধা দেয় এবং লাঞ্ছিত করে আমার সকল ফাইলপত্র কেড়ে নেয়। এরপর আমাকে অফিসে ঢুকতে না দিয়ে জোর করে বের করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি জেলা নির্বাচন অফিসের সিসি ক্যামেরায় সকল কর্মকাণ্ডের রেকর্ড রয়েছে। কারা সন্ত্রাসী হামলা করেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তাদের চিনতে পেরেছি। তারা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রুহুল আমিনের লোকজন। তারা আমার ব্যাংক ড্রাফটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এখন মনোয়নয়পত্র নেওয়া ও জমা দেয়ার আর কোনো পথ নেয়। আমি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা নির্বাচন অফিসারকে ফোন দিয়েছি কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। বর্তমানে আমি নিজের জীবনের নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছি বলেও জানান তিনি। 

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রুহুল আমিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নাই। আমি শহরের বাইরে আছি। এ ধরনের কোনো কথা আমার কানেও আসেনি। আমার লোকজন না, হয়তো অন্য কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এমনকি নির্বাচন অফিসে এমন কোনো ঘটনার খবরও আমাকে কেউ দেয়নি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামীকালকে নির্বাচন অফিসে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। 

জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা একেএম গালিভ খাঁন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তবে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত কোনো মনোনয়নপত্র জমা হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস