গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শেষ করে একজন পরীক্ষার্থীর যেখানে বিশ্রাম করার কথা, সেখানে রবিন মিয়া (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী অটোরিকশা নিয়ে রাস্তা বের হয়েছে। বাবার কাছ থেকে পকেট খরচের টাকা না নেতেই সে অটোরিকশা চালাচ্ছে। 

রবিন মিয়া কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার দক্ষিণ মুমিরদিয়া গ্রামের মো. রমজান আলীর ছোটে ছেলে। সে হাজেরা সুলতানা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। 

সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, কটিয়াদী উপজেলার দক্ষিণ মুমিরদিয়া গ্রামের মো. রমজান আলীর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। রবিন সবার ছোট। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়ায় লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে কৃষি কাজও করতে হয় মাঝে মধ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষায় দিয়েই সে রাস্তায় বের হয় অটোরিকশা নিয়ে। নিজের হাত খরচের পাশাপাশি পরিবারে অর্থের জোগান দিতে অটোরিকশা চালায় সে। 

এসএসসি পরীক্ষার্থী রবিন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলে, গতকাল প্রথম পরীক্ষা ছিল বাংলা প্রথমপত্র। পরীক্ষা ভালো হয়েছে। পরীক্ষা দিয়েই বাড়িতে এসে জামা পাল্টে বের হয়ে পড়ি অটোরিকশা নিয়ে। নিজের হাত খরচের পাশাপাশি পরিবারের হাল ধরারও চেষ্টা করি। এছাড়াও কৃষি কাজে বাবাকে সহায়তা করার চেষ্টা করি। আমি যদি পরিবার থেকে একবার ১০০ টাকা নিই, তাইলে পরে আবার টাকা চাইলে কীভাবে দেবে। সেই চিন্তা করেই আমার এই চেষ্টা। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের খরচ যোগাড় করতে অটোরিকশা চালাই। এতে  আমার কোনো লজ্জা লাগে না।

রবিনের বাবা মো. রমজান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, রবিন শান্ত ছেলে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে অটোরিকশা চালিয়ে আয় করে। অন্য ছেলেদের মতো তার বাজে কোনো নেশা নেই। সময় পেলেই সে কাজ করে। আমি রবিনের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই সে যেন জীবনে বড় হতে পারে।

মুমুরদিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শামীমা আক্তার শাম্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পাশের বাড়ির রবিন খুব ভালো ছেলে। বর্তমানে অনেক জায়গায় কিশোর গ্যাংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় খারাপ কাজ করে। কিন্তু রবিন সেই বিষয় থেকে অনেক দূরে। বাজার-ঘাটে আড্ডা দেয় না, পড়াশোনা করে এবং সময় পেলে অটোরিকশা চালিয়ে আয় করে।

আরএআর