মানিকগঞ্জে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসে দুই রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ধরা পড়েছেন। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ বলেন, দুপুরের দিকে পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার পর দেখা যায় আবেদনকারী নারী একজন রোহিঙ্গা। তার নাম হুমায়রা। তার বাবার নাম হামিদুল্লাহ। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।

পুলিশ ও পাসপোর্ট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আটক রোহিঙ্গা নারী প্রকৃত নাম-ঠিকানা আড়াল করে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসেছিলেন। তিনি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের চর চান্দহর গ্রামের খলিলুর রহমান ও রাশিদা খাতুনের মেয়ে তাসনিম বেগম নামে ইউনিয়ন পরিষদের সনদ তৈরি করে পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন। এই নাম-পরিচয় ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতানি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ তৈরি করেন। তার সঙ্গে আসা ব্যক্তির নাম আবু তাহের। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশে এসেছেন এবং বর্তমানে তিনি চকরিয়ায় থাকেন বলে জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা নারীকে অনৈতিক কাজে সহায়তার কারণে তাকেও আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসিয়ে ভুয়া নাম, পরিচয়, ঠিকানা ব্যবহার করে সনদ তৈরি করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করব।

রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে থাকা রোহিঙ্গা আবু তাহের বলেন, আটক রোহিঙ্গা নারী হুমায়রা আমার চাচি। দুই বছর আগে টেলিফোনে সোদি প্রবাসী রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আবু তালেবের সঙ্গে চাচির বিয়ে হয়েছে। স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য তিনি পাসপোর্ট করতে এসেছেন। সাদ নামে পাসপোর্ট অফিসের এক দালালের মাধ্যমে আবেদন করা হয়। এই পাসপোর্ট করার জন্য ওই দালারের সঙ্গে এক লাখ টাকা চুক্তিও করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী দালালকে ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার করা ছিল। আবেদন জমা দেওয়াসহ সকল কাজই হয়ে গিয়েছে। তবে আজকে ফিঙ্গার দিতে এসে ধরা পড়েছি।

মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, পাসপোর্ট আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ দুজন রোহিঙ্গাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

সোহেল হোসেন/আরএআর