রংপুরের মিঠাপুকুরে অন্যের আশ্রয়ে রান্নাঘরে মানবেতর জীবনযাপন করা বিধবা নানি-নাতনির পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)। হতদরিদ্র ও অসহায় বৃদ্ধা মনিজা বেওয়া ও তার বিধবা নাতনি আঁখি খাতুনকে ১৭ শতাংশ কৃষিজমির বন্ধকনামা হস্তান্তর করার পাশাপাশি পুনাক থেকে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রংপুর পুলিশ লাইন্স মাঠের কল্যাণ শেডে সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জমির বন্ধকনামা হস্তান্তর ও দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা।

রংপুর জেলা পুনাক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভানেত্রী জীশান মীর্জা সহায়তা প্রদান ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ শেষে পুলিশ লাইন্স পুকুরপাড়ে হাড়িভাঙা আমের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি নবনির্মিত পুনাক কমপ্লেক্স ঘুরে দেখে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এ সময় পুনাক সভানেত্রী রংপুর পুনাকের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল আলীম মাহমুদ, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, পুনাক রংপুর রেঞ্জের সভানেত্রী জেসমিন মাহমুদ, পুনাক রংপুর জেলা সভানেত্রী সোনিয়া আকতারসহ কেন্দ্রীয়, রেঞ্জ ও জেলা পুনাকের নেতৃবৃন্দ এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

 গত ৮ আগস্ট ‘প্রতিবেশীর রান্নাঘরে বিধবা নানি-নাতনির মানবেতর জীবন’ শিরোনামে ঢাকা পোস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে ওই বৃদ্ধা ও তার নাতনির অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে পুনাক সভানেত্রী তাদের জন্য মানবিক সহায়তার হাত বাড়ান।

মিঠাপুকুর উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের দৌলত নূরপুর গ্রামে থাকেন মনিজা বেওয়া ও তার নাতনি আঁখি আক্তার। তারা দুজনই বিধবা। মনিজা বেওয়া ওই গ্রামের মৃত আফছার আলীর স্ত্রী। ২০ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। নিদারুন কষ্টে থাকা এই বৃদ্ধার সঙ্গী হন তার বিধবা নাতনি আঁখি আক্তার।

ভিক্ষাবৃত্তিতে কোনো রকমে দিনপার হলেও রাতে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় অন্যের রান্নাঘরে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী এক ভাতিজার আশ্রয়ে রান্নাঘরে নাতনিকে নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করে আসছিলেন মনিজা বেওয়া। অসহায় এ পরিবারটিকে মিঠাপুকুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে নগদ অর্থ সহায়তাও পেয়েছেন বিধবা নানি-নাতনি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর