নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের দিনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ কার্যক্রম চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটুর সমর্থক সৈয়দ নবাব আলীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে সৈয়দ নবাব আলীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা মারধর করেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। 

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার রুমের মধ্যে যদি স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের এমন মারধর করা হয়, ভয়ভীতি দেখানো হয়, তাহলে নির্বাচন কতটুকু শান্তিপূর্ণভাবে হবে তা নিয়ে আমি সন্দিহান।

তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে ব্যাহত করে। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ইতোমধ্যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমন ধরনের ঘটনা ঘটালে নির্বাচন কমিশন তথা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটালে সরকার যেমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। বিরোধী দলগুলো এ ধরেনের ঘটনাকে উদাহরণ টেনে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মানেই সিলেকশন নয়। ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন,  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রার্থী সবার প্রতি আমি আহ্বান জানাই।

এ সময় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফকরুল হাসান, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, আওয়ামী লীগের সাংগঠিনক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন আলম, গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস আনারস প্রতীক চেয়েছিলেন। অন্যদিকে সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুও আনারস চেয়েছিলেন। একই প্রতীক চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। স্থানীয় নেতা-কর্মী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রার্থী যদি লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে আমরা বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস আনারস, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু মোটরসাইকেল ও সুলতান মাহমুদ বিপ্লব চশমা প্রতীক পেয়েছেন। 

আরএআর