প্রতি বছর মহালয়া উপলক্ষে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়া ঘাট থেকে বদেশ্বরী ঘাটে যান সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। এদিন দুই ঘাটে মানুষের উপস্থিতি থাকে প্রচুর। সেতু না থাকায় এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে যাওয়ার মাধ্যম হলো নৌকা। ফলে সতর্কতা ও বিশৃঙ্খলা রোধে ঘাটে টহল দেন বোদা থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। গত রোববার দুর্ঘটনার দিনও ঘাটে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ছিল। তারা সতর্ক করলেও শোনেননি মাঝি ও যাত্রীরা। 

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আউলিয়া ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে ৫০০ গজ দূরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঝ নদীতে উল্টে যায় নৌকাটি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

পুলিশ ওস্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যে নৌকার ধারণ ক্ষমতা ছিল ৪০-৫০ জন যাত্রী, সেই নৌকাতে যাত্রী ওঠে শতাধিক। বেশি যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করার কারণে যাত্রার পর থেকেই পানি উঠতে শুরু করে নৌকায়। ৫০০ গজ যেতেই উল্টে ডুবে যায় নৌকাটি। 

সাঁতরে বেঁচে আসা কুসুম ও যশোবালা নামে দুই নারী বলেন, নৌকায় অনেক লোক ছিল। ঘাটে ভিড়তেই লোকজন হুমড়ি খেয়ে উঠতে থাকে। পুলিশ বেশি মানুষ উঠতে নিষেধ করলেও কেউ কথা শোনেননি। নৌকায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অল্প করে পানি ওঠা শুরু করে। তারপর ডুবে যায়। আমরা সাঁতার জানতাম বলে এ যাত্রায় বেঁচে ফিরেছি। 

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের উপস্থিতিতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ঢাকা পোস্ট। তবে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুভ মহালয়া উপলক্ষে আউলিয়া ঘাটে দুর্ভোগ এড়াতে এবং বিশৃঙ্খলা রোধে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। 

পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে অধিক যাত্রী নিয়ে নৌকার যাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, একটা ছোট ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। নৌকা ঘাটে আসা মাত্রই হুমড়ি খেয়ে উঠতে থাকে সবাই। আমাদের পুলিশ সদস্যরা হ্যান্ডমাইকে অধিক যাত্রী যাতে না ওঠে তার জন্য সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তারা কেউ সতর্কতা মানেননি। আর সতর্কতা অবলম্বন না করাতেই আজ এমন দিন দেখতে হলো।

এসপি