রাজবাড়ী পৌরসভার লক্ষ্মীকোল এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ কুমার সাহা (৫২)। তিনি ৬ বছর ধরে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। আর বাবাকে বাঁচাতে তার একমাত্র কলেজপড়ুয়া মেয়ে পিউ সাহা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

সম্প্রতি পিউ সাহা বাবার অসুস্থতা নিয়ে তার ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেন। তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন। আমি হেরে যাচ্ছি, জিতে যাচ্ছে ক্যানসার। আমি আর পারছি না। সব দিক দিয়ে ভেঙে যাচ্ছি। আপনারাই পারেন আমার বাবাকে বাঁচাতে, আমাকে একটু সহযোগিতা করতে। ২০১৭ সাল থেকে বাবাকে নিয়ে ৬ বছর যুদ্ধ করার পর এভাবে হেরে যাচ্ছি যা আমি মেনে নিতে পারছি না। চোখের সামনে সব কিছু তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি একা কিছু করতে পারছি না। অর্থের অভাবে বাবার চিকিৎসা করাতে পারছি না।আমার বাবা বাঁচতে চায়, আমি বাবাকে বাঁচাতে চাই। আপনারা একটু সহযোগিতা করুন। যারা আমার পোস্টটি দেখছেন সেসব বড় ভাই ও বোনেরা আমাকে সহযোগিতা করবেন। নিরুপায় হয়ে বাবাকে বাঁচাতে আপনাদের কাছে সাহায্য চাইছি। বাবাকে নিয়ে আমার এই যুদ্ধে আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

জানা গেছে, গোবিন্দ সাহা ২০১৬ সালের দিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর ২০১৭ সালের দিকে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তিনি মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন। তার রক্তকণিকা অণুচক্রিকা ও লাল রক্ত ​​কণিকা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে দ্রুত কেমোথেরাপি দিতে বলেছেন। কেমোথেরাপি কোর্স শেষ হলে বোন ম্যারো ট্যান্সপ্লান্ট করাতে হবে যা খুবই ব্যয়বহুল।

পিউ সাহা বলেন, প্রতিদিন বাবাকে এক ব্যাগ করে সাদা রক্ত সিঙ্গেল ডোনার থেকে দেওয়া হচ্ছে। এই এক ব্যাগ রক্তের দাম ১৪ হাজার ৫০০ টাকা।এ পর্যন্ত ৫ ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও হাসপাতালের খরচ ও ওষুধপত্র দিতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বাবার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। কিন্তু এখন আমাদের সহায়সম্বল সব শেষ। আমার একার পক্ষে বাবার চিকিৎসার খরচ যোগানো সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ৬ বছরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব শেষ। এখন রাস্তার ফকির হয়ে গেছি। ঢাকায় আসছি শুধু টেস্ট করাতেই চলে যাবে ৪৫-৫০ হাজার টাকার মতো। ডাক্তার বলেছেন, ব্লাড ক্যান্সার এখন যে অবস্থায় আছে তাতে কেমোতে কাজ হবে না। শরীরের অবস্থা ভালো না। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে যার খরচ ২৫-৩০ লাখ টাকা।

পিউ সাহা বলেন, বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে আমি। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। জানি না কীভাবে কী করব? আর বাবার কিছু হলে আমি আর মা কীভাবে বাঁচব? কীভাবে সব কিছু সামলে নেবো। পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। এখন এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সবার সহযোগিতা ছাড়া বাবার চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। বাবা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার আইসিইউয়ের ১০ নম্বর বেডে ভর্তি রয়েছে।

পিউ সাহার বাবার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা- গোবিন্দ কুমার সাহা, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ১৬৩২৯০১০৩৩৪০৫, পূবালী ব্যাংক, রাজবাড়ী শাখা, রাজবাড়ী। এছাড়া পিউ সাহার সঙ্গে ০১৭১৪-৩৩৮০৯১ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

মীর সামসুজ্জামান/এসপি