চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত শুক্রবার (১ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের ১২৩ নম্বর বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (৩ অক্টোবর) সকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। 

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সরকারি অর্থায়নে নির্মাণাধীন শহীদ মিনারের লাল বৃত্তের টাইলসের আংশিক অংশ ও মেঝের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. মেহেরুন্নেসা। 

পুলিশ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন ও পাশের গ্রামের এমএম আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক পান্নার সঙ্গে বিরোধের জের ধরে শহীদ মিনারে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বিদিরপুর এলাকার মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে তারেক রহমান (৩১), মৃত জহরুল ইসলামের ছেলে নয়ন আলী (১৯), শাহাবুদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (২০) ও মো. বাবলুর ছেলে নূর মোহাম্মদ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ নবাবগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র দশম শ্রেণির ছাত্র। 
 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেসা ঢাকা পোস্টকে জানান, সভাপতির সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অন্য একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক পান্নার পরিকল্পনায় স্থানীয় কয়েকজন ছেলে এই ভাঙচুর করে। শনিবার সকালে জানতে পারি শহীদ মিনার ভাঙচুর করা হয়েছে। জানার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। 

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার সকালে রাজমিস্ত্রির কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কমিটির অন্যান্য সদস্য ও প্রধান শিক্ষককে খবর দিই। শহীদ মিনারের লাল বৃত্তের ১০টির মতো টাইলস ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে এর মেরামতকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে স্কুলশিক্ষক পান্নার সঙ্গে বিরোধের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। 

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন-নাহার রুবিনা ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে রোববার সকালে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এমনকি ভাঙচুর করা কাজ পুনরায় সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে, গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিকেল করে প্রাইভেট পড়ান এমএম আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক মো. পান্না। এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেনের। তাদের বিরোধের কারণেই শহীদ মিনার ভাঙচুর করা হয়েছে। এর সূত্র ধরেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর সংশ্লিষ্টদের মামলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। 

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর জাহান জানান, প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস