লোকসংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতি

বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতি বলেছেন, জীবিত থাকতে রাষ্ট্রীয় কোনো পদক কিংবা পুরস্কার না পেলে মরার পর পুরস্কার চাই না। মঙ্গলবার (০২ মার্চ) দুপুরে নেত্রকোনার কেন্দুয়া ক্লাব কার্যালয়ে একান্ত আলাপচারিতায় ঢাকা পোস্টকে এসব কথা জানান তিনি।

কুদ্দুস বয়াতি বলেন, সারা জীবন আমি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য গান গেয়েছি। দেশের পতাকা মাথায় নিয়ে লোকসংগীতকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দিয়েছি। দেশের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে গানে গানে উদ্বুদ্ধ করেছি। করোনা মহামারিতে দেশের মানুষকে সচেতন করতে গান গেয়েছি। কিন্তু আমার ভাগ্যে আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পদক কিংবা পুরস্কার জোটেনি। এতে আমার আফসোস নেই। তবে জীবিত থাকতে রাষ্ট্রীয় কোনো পদক কিংবা পুরস্কার না পেলে মরার পর চাই না।

গান গেয়ে আমি দেশ-বিদেশের ভক্তদের অফুরন্ত ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের ভালোবাসায় আমি নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। কুদ্দুস বয়াতি এখন আর আগের বয়াতি নেই। এখন আমি ডিজিটাল কুদ্দুস বয়াতি।

কুদ্দুস বয়াতি, লোকসংগীত শিল্পী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কুদ্দুস বয়াতি বলেন, মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার মা। তিনি আমার চিকিৎসার জন্য ২০ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন। শুধু আমি না, আমার মতো এদেশের হাজার হাজার অসুস্থ ও অসহায় শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তাকে ধন্যবাদ। তবে এভাবে সাময়িক অর্থ সহায়তা না দিয়ে লোকসংগীত শিল্পীদের নিয়মিত ভাতা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই।

কুদ্দুস বয়াতি ১৯৪৯ সালে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আরফান আলী মায়ের নাম আমেনা খাতুন।

বাবার হাত ধরে শিশুকাল থেকেই লোকসংগীতে হাতেখড়ি হয় কুদ্দুস বয়াতির। ১৯৮৮ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে পালাগান পরিবেশন করে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদসহ গুণীজনদের নজরে আসেন তিনি।

১৯৯২ সালে হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে ‘এই দিন দিন নয় আরও দিন আছে’ গানটি পরিবেশন করে দেশব্যাপী পরিচিতি পান কুদ্দুস বয়াতি। সেই থেকে কুদ্দুস বয়াতিকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলাদেশের লোকসংগীতকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন কুদ্দুস বয়াতি।

মো. জিয়াউর রহমান/এএম