মুন্সীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে যুবদল কর্মী শহিদুল ইসলাম শাওন নিহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১ এ বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। 

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার মামলাটির বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। মামলার বাদী সালাউদ্দিন খান কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

মামলার এজাহারে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেবসহ ৯ পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত পুলিশ সদস্য এবং আরও ২০০-৩০০ জন সিভিল পোশাক পরিহিত অস্ত্রধারী ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে মোট ৩৫৯ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ উল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব, মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি তরিকুজ্জামান, সদর থানার এসআই মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. আরিফুর রহমান, সুকান্ত বাউল, এএসআই নকুল চন্দ্র ধর, অজিত চন্দ্র বিশ্বাস ও মন্টু বৈদ্য।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশের গুলিতে শাওন নিহত হন। এ ঘটনায় আমরা আদালতে অভিযোগ দাখিল করেছি। আদালত জানিয়েছে পরে আদেশ দেবেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে , গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে মুক্তারপুর পুরাতন ফেরিঘাটের কোল্ড স্টোরেজের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। দুপুর থেকে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। অতি উৎসাহী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম মিছিল কারীদের হাত থেকে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিনিয়ে নেন। তিনি পা দিয়ে ব্যানার মারাতে থাকেন।

মিনহাজুল ইসলাম মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার নির্দেশে অপর আসামিরা নেতা-কর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল, রাবার বুলেটসহ সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করেন। তখন নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলার শিকার হয়ে আহত অবস্থায় ছোটাছুটি শুরু করে। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জন পুলিশ সদস্য ও ২০০ থেকে ৩০০ জন সশস্ত্র সরকার দলীয় সন্ত্রাসী আগ্রাসীভাবে নেতা-কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে সময় যুবদল নেতা শহীদুল ইসলাম শাওন ঘটনাস্থল থেকে চলে যাচ্ছিলেন। পুলিশ শাওনের কপালের ডান দিকে গুলি করে। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাওন মারা যান। তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গুলির বিষয়টি উল্লেখ করে।

মামলার বাদী সালাউদ্দিন খান বলেন, অভিযোগ দাখিল করেছি। আদালতের আদেশের অপেক্ষায় আছি।

শাওনের পরিবার থেকে কেউ বাদী হল না কেন- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশে তিনি মামলার বাদী হয়েছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে রয়েছেন। এজন্য তারা এখন মামলার বাদী হননি। তবে পরবর্তীতে তারা এ মামলার সঙ্গে সংযুক্ত হবেন।

ব.ম শামীম/আরএআর