নড়াইলের লোহাগড়ায় মধুমতি সেতু চালুর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩ হাজার যানবাহন চলাচল করেছে। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে চার লাখ টাকা।

সোমবার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মধুমতি সেতুর উদ্বোধন করেন। এরপর সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

উদ্বোধনের পর থেকেই ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখতে ভিড় করছেন অনেকে। মঙ্গলবার বিকেলে সেতুতে দর্শনার্থীদের ঢল নামে।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তথ্য মতে, সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেতুতে ২ হাজার ৫০০টি গাড়ি চলাচল করেছে। এর মধ্যে সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সেতুটি পাড়ি দেয় ১ হাজার ৫০০ যানবাহন। এসব যান থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাড়ি চলেছে ১ হাজার, টোল আদায় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত গাড়ি চলাচল করেছে আরও ১ হাজার এবং টোল আদায় হয়েছে আরও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩ হাজার যানবাহন থেকে সর্বমোট টোল আদায় হয়েছে চার লাখ টাকা।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন মধুমতি সেতু, টোলিং সিস্টেম প্রজেক্ট ম্যানেজার আতিকুল ইসলাম আতিক। 

সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেতুর টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে বড় ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০ টাকা, দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশনকৃত জিপ ও রেকার ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, অটো, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিকশা, ভ্যান ও বাইসাইকেল ৫ টাকা। 

টোল হার নির্ধারণ সম্পর্কে পরিবহন চালক নূর অজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যান্য ব্রিজের টোলের তুলনায় মধুমতি ব্রিজের টোল তুলনামুলক কম। আমরা যশোর থেকে ঢাকা বেশ কয়েকবার যাতায়াত করি। আমাদের জন্য টোল ঠিক আছে।

ট্রাকচালক সাত্তার বলেন, মালামাল নিয়ে আজ প্রথম সেতু দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের পণ্যবাহী ট্রাকের টোল একটু কম হলে বেশি ভালো হতো।

মোটরসাইকেলচালক ইফাজ আমান বলেন, ট্রলারে পার হতে কালনা ঘাটে আগে ৪০ টাকা লাগত। কিন্তু মধুমতি সেতু দিয়া পার হচ্ছি ১০ টাকা দিয়ে। এটা আমাদের বাইকারদের জন্য অনেক ভালাে হয়েছে। 

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল হালিম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনো সেতুতে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায় শুরু হয়নি। টোলপ্লাজার আটটি বুথের মধ্যে ৫টি চালু রয়েছে। প্রতিটি টোলের কম্পিউটার রশিদ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে। এখনো টোল ইজারা দেওয়া হয়নি। গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টোল আদায় করছেন। দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে মধুমতি সেতুর টোল ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। 

সজিব রহমান/আশিক জামান/এসপি