করোনার মহামারির শুরুতে সবাই যখন ঘরে বন্দি তখনই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন এপি পলাশ। ঘরে বসেই তিনি ইউটিউবে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিডিও এবং কোর্স করে নিজেকে অনেক বিষয়ে দক্ষ করে তুলেছেন। আর দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তিনি এখন সফল ডিজিটাল মার্কেটার। 

২৬ বছর বয়সী এপি পলাশের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার শ্রীপুর ডাকঘর চড়িয়াল বিল বাজার এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে তিনি। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পলাশ বড়। 

গ্রামে থেকেই পলাশ এখন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি পলাশের এই দক্ষতার কথা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। অনেকেই এখন পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তার মতো পারদর্শী হতে। এলাকার তরুণ-তরুণীরা এখন পলাশের ভক্ত। আর পলাশও তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে চেষ্টা করছেন দক্ষ বানাতে।

এমবিএ শেষ করা পলাশের ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ ছিল বিভিন্ন প্রযুক্তির বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার। সেই আগ্রহকে লালন করে তিনি এখন একজন ডিজিটাল মার্কেটার। 

এপি পলাশ বলেন, কোর্স শেষ করে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য টানা কয়েক মাস প্র্যাকটিস করেছি। তারপর মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করি এবং দেড় মাস পর প্রথম কাজ পাই। তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি আয় করছি, পরিবারকে সাপোর্ট দিতে পারছি এতেই আমি অনেক খুশি।

তিনি বলেন, কোনো কাজে হতাশ হওয়া যাবে না। লেগে থাকতে হবে। লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। কেউ কেউ শুরুতে যেকোনো কাজে খুব আগ্রহী হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই আগ্রহ শেষ হয়ে যায়। রাতারাতি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। এসব বুঝতে হবে।

পলাশের গ্রামের প্রতিবেশী শেখ গোলাম হোসাইন সাজু বলেন, আমি পলাশকে ছোটবেলা থেকেই চিনি। ছোটবেলা থেকেই ওর নতুন কিছু করা বা জানার প্রবল আগ্রহ ছিল। সেই আগ্রহ থেকে অনলাইনে কাজ করে সফল হয়েছে এবং এলাকার অন্যান ছেলেদের উদ্বুদ্ধ করেছে।

পলাশের বাবা আব্দুল আজিজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনলাইনে যে ইনকাম করা যায় তা আগে বিশ্বাস করিনি। চারপাশে শুধু শুনতাম ঘরে বসে টাকা আয় করা যায়। এটা বৈধ নাকি অবৈধ সেটা নিয়েও আগে নানান প্রশ্ন কাজ করতো। এখন আমার ছেলেকে দেখে বিশ্বাস হচ্ছে সত্যি সত্যি ঘরে থেকেও কাজ করা যায়। তার এমন দক্ষতায় গ্রামের অনেক মানুষ পলাশের ভক্ত হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমার ছেলে এখন সংসারে সাপোর্ট দিচ্ছে। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে গর্বিত।

ফ্রিল্যান্সার সাইমন আহমেদ বলেন, এপি পলাশ একজন সৃষ্টিশীল মানুষ। নতুন স্কিল ডেভলপ এর ব্যাপারে প্রচুর আগ্রহ আছে তার মধ্যে। আমি মনে করি এপি পলাশ ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।

এপি পলাশ মনে করেন প্রত্যেক মানুষের কিছু বিষয়ে দক্ষ হওয়া উচিত। পৃথিবী ডিজিটাল হচ্ছে। পৃথিবীর সঙ্গে নিজেকেও এগিয়ে নিতে হবে। স্কিল থাকলে ঘরে বসে ইনকাম করা সম্ভব। তিনি মনে করেন বেকারত্ব থেকে বের হওয়া মনের ইচ্ছেই আসল শক্তি।

এমএএস