বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস, ধুলো আর ময়লায় ভরা বেসিন
টাইলস করা বেসিন। ধুলো আর ময়লা জমে গেছে সেখানে। পানির ট্যাপের জন্য দুটি ফুটো আছে, কিন্তু পানির ট্যাপ নেই। তাই পানি পড়ার সুব্যবস্থা নেই। সাবান রাখার কেস আছে। কিন্তু সাবান নেই। সেটিও ময়লায় ভরা। ট্যাপ থেকে পানি পড়ার স্থানেও রয়েছে অসংখ্য ময়লা।
জয়পুরহাট শহরের বাসটার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত একটি বেসিনের চিত্র এটি। যেটির বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। করোনার প্রাদুর্ভাব যখন বেড়ে যায় তখন জেলায় ৩৩টি বেসিন স্থাপন করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
বিজ্ঞাপন
শুধু বাস টার্মিনাল নয়, ৩৩ বেসিনের হাতে গোনা কয়েকটি বেসিন ছাড়া প্রায় সবগুলোর অবস্থা একেবারে বেহাল। জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের বেসিনটিরও অবস্থা একই। যেন বাস টার্মিনাল বেসিনের অনুরূপ।
আজ ১৫ অক্টোবর, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। কিন্তু বেসিনগুলোর অবস্থা বেহাল। সরেজমিনে দেখা গেছে, আক্কেলপুর উপজেলার সাব রেজিস্টার অফিসের বেসিনটিতে ময়লা আর গাছের পাতায় ভরে গেছে। কাঁচাবাজার এলাকার বেসিন যেন এক ধরনের ডাস্টবিন, ভালো নেই আক্কেলপুর থানার বেসিনটিও। তাছাড়া ক্ষেতলাল, সদর, পাঁচবিবি উপজেলাসহ জেলার ৩৩ বেসিনের হাতে গোনা কয়েকটি বেসিন ছাড়া প্রায় সবগুলোর অবস্থা একেবারে বেহাল।
বিজ্ঞাপন
আক্কেলপুরের কাঁচাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী টিটু ইসলাম বলেন, এই বেসিনে পানি কীভাবে আসবে সেটারই ব্যবস্থা নেই। হাত ধোয়া তো দূরের কথা। বেসিনের ভেতরে ময়লা। বাইরে আবার ময়লার ভ্যান। বেসিনের চারপাশেই ময়লা।
বাস টার্মিনাল এলাকার এক চা দোকানি বলেন, এখন বাস ধোয়ার জন্য মাঝে মাঝে ওই বেসিন ব্যবহার হয়। বেসিনের ভেতরে বালতি রেখে সরাসরি পাইপ থেকে পানি নেওয়ায় ট্যাপ ভেঙে গেছে। এটি কোনো মানুষই এখন ব্যবহার করে না।
জানতে চাইলে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমে বেসিনটি ব্যবহার হতো, কিন্তু এখন হয় না। আর সেখানে বালতি রেখে কেন পানি নেবে। বাস ধোয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলায় ৩৩টি বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বেসিন বিএমডব্লিউএসএসটি প্রকল্পের আওতায়। জয়পুরহাট সদরে ১৫টি, পাঁচবিবিতে ৬টি, আক্কেলপুর উপজেলায় ৬টি, ক্ষেতলালে ৩ ও কালাই উপজেলায় ৩টি। এসব বেসিন বাস্তবায়নে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। আর বাস্তবায়নের পর সেসব বেসিন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে হস্তান্তর করে দেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘হাতের পরিচ্ছন্নতায় এসো সবে এক হই’। হাত ধোয়াকে জীবনযাপনের অংশ করে নেওয়া অর্থাৎ অভ্যস্ত করানোর লক্ষ্যে পালিত হয়ে থাকে দিবসটি। তবে বেসিনের অবস্থা এমন! জানতে চাইলে জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেসিনগুলো স্থাপনের পর তো ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। তারাই ম্যানেজমেন্ট করবে। এ বিষয়ে আমি খোঁজ নেব।
চম্পক কুমার/এমএএস