স্বামীর হাতেই প্রাণ গেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা তাহেরা খাতুনের (২০)। ঘটনার তিন দিনেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিহতের স্বামী তুষার আলীকে (২৩)। গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। 

গ্রেপ্তারকৃত তুষার আলী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মির্জাপুর এলাকার নাজির উদ্দিনের ছেলে। নিহত তাহেরা খাতুন গোদাগাড়ীর রাজরামপুর চাতরা গ্রামের দানেস আলীর মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাত মাস আগে তুষার আলীর সঙ্গে তাহেরার বিয়ে হয়। তাহেরা মানসিকভাবে অনেকটা ভারসাম্যহীন ছিলেন। প্রায়ই তিনি পাগলামি করতেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন তিনি। আর ঢাকায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তুষার। গত ১২ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তাহেরা। তবে এ নিয়ে থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি করেনি পরিবার। ১৫ অক্টোবর দুপুরের দিকে উপজেলার গড়গড়িয়া এলাকার একটি ধানখেত থেকে তাহেরার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ১৮ অক্টোবর তার স্বামী তুষার আলীকে গ্রেপ্তার করে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ। 

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, মাঝে মধ্যে পাগলামি করতেন তাহেরা। এ কারণে স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন তুষার। ১২ অক্টোবর বিকেলে স্ত্রীকে কাঁকনহাটে ডেকে নেন তুষার। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে রাখতে যাওয়ার নাম করে ধানখেতের ভেতরের রাস্তার মধ্য দিয়ে রওনা হন। নির্জন জায়গায় পৌঁছালে হাতে থাকা বাটন মোবাইল ফোন দিয়ে স্ত্রীর মাথায় সজোরে আঘাত করেন তুষার। তাতে প্রাণ হারান তাহেরা। এরপর মরদেহ ধানখেতে ফেলে তুষার পালিয়ে যান। 

তুষার স্বীকার করেন, ঢাকায় কাজে যাওয়ার নাম করে ঘটনার আট দিন আগে স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসেন। কিন্তু তিনি ঢাকায় যাননি। স্বজনরাও জানতেন না বিষয়টি। 

এদিকে তাহেরার মরদেহ উদ্ধারের দুই ঘণ্টার মধ্যেই শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন তুষার। তার অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং দ্রুত এলাকায় ফেরা নিয়ে সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। গ্রেপ্তার করা হয় তুষারকে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সবকিছু জানান তিনি। 

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর