হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কাননচক গ্রামে বিষপান পান করে পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখাতে গিয়ে  দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৩ মার্চ) সকালে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। 

এর আগে মঙ্গলবার (২ মার্চ) গভীর রাতে তারা দুজন বাবার বাড়িতে বসে একই সঙ্গে বিষপান করেন। পরবর্তীতে অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

নিহতরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার দেলোয়ার খানের স্ত্রী ও চিতলমারী উপজেলার কাননচক গ্রামের হাকিম খানের মেয়ে প্রীতি বেগম (২০) এবং আড়ুয়া বর্ণি গ্রামের শামীমের স্ত্রী ও কাননচক গ্রামের জাকির খানের মেয়ে   বৃষ্টি বেগম (২১)। নিহতরা সম্পর্কে আপন চাচাতো বোন। তাদের প্রত্যেকের এক বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় সমবয়সী হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই প্রীতি ও বৃষ্টির মধ্যে খুব ভালো বোঝাপোড়া ছিল। প্রতিটি কাজই তারা একসঙ্গে করতেন। 

পরিবারের দাবি- বৃষ্টির বুদ্ধি কিছুটা কম ছিল। যার ফলে ছোটবেলা থেকেই প্রীতির পরামর্শ অনুযায়ী চলতেন বৃষ্টি। পারিবারিক কলহের কারণে বৃষ্টি সামান্য বিষপান করে স্বজনদের ভয় দেখাতে চান। বিষয়টি প্রীতির সঙ্গে আলোচনা করে দুইজনই অল্প অল্প করে বিষপান করে পরিবারকে ভয় দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। একপর্যায়ে বিষপান পান করার ফলে তাদের করুণ মৃত্যু হয়। 

চিতলমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই বোন মারা যাওয়ার ঘটনায় গোপালগঞ্জ থানায় অপমৃত্য মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আসল কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। 

পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, বৃষ্টি ও প্রীতি প্রায় সমবয়সী। তারা সব সময় একসঙ্গে  চলাফেরা করতেন। পারিবারিক কলহের জেরে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে প্রীতি বিষপানের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে পরামর্শ করে দুই বোনই বিষপান করেন। 

কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার মতিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। নিহত দুই বোনের দুটি সন্তানও রয়েছে। এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও অন্য কোনো বিষয় আছে কি-না খতিয়ে দেখতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।  

তানজীম আহমেদ/আরএআর