কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ১০ বছর আগে তৈরি করা একটি কালভার্ট এখন এলাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০ থেকে ২৫ ফুট প্রশস্ত ওই খালের ওপর মাত্র ৪ ফুট প্রশস্তের কালভার্টটি কোনো কাজে আসছে না ওই এলাকার মানুষের। এর অন্যতম ভোগান্তির কারণ হচ্ছে, এই কালভার্টে উঠতে ও নামতে দুই পাড়ে দুটি সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। এতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। 

মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের যুগের খিল এবং খামার গ্রামের সড়কের মাঝখানে তৈরি করা হয়েছে কালভার্টটি।

স্থানীয় সরকারের লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি) ২ এর কর্মসূচিতে নির্মাণ করা হয়েছিল কালভার্টটি। কিন্তু খালের মাঝখানে ৪ ফুট প্রশস্তের ওই কালভার্টের দুই পাশে প্রায় ১০ ফুট করে ফাঁকা থাকায় সেই কালভার্টে উঠতে হলেও বাঁশের সাঁকো আবার ওই পাশে নামতে গেলেও বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা চলাচলকারীদের।

খামার গ্রামের বাসিন্দা আনিসুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যুগেরখিল এবং খামার গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষের চলাচল এ সড়কটি দিয়ে। মাঝখানে খাল পাড়ি দিতে গিয়েই যত বিপত্তি বাঁধে। আপনারা(সাংবাদিকরা) নিজ চোখেই দেখুন মানুষের ভোগান্তি। এত মোটা একটা খালের ওপর ৪ ফুটের কালভার্ট করে কী লাভ হলো? মানুষ খালের এপাড় থেকে ওপাড়ে আবার ওপাড় থেকে এপাড়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ডিজিটাল এই যুগে এসেও আমাদের গ্রামের মানুষকে প্রাচীন পন্থায় খাল পার হতে হয়। এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? 

ওই এলাকার যুগেরখিল গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম এই সড়কে খালের ওপর প্রচুর ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। একজন মানুষ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় হাসপাতালে নিতে। বৃদ্ধ মানুষদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আবার উভয় গ্রামের মানুষের জমিতে উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া করতে প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ বিষয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মুরাদনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ আব্দুল হাই খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এসব কালর্ভাট আমরা নির্মাণ করি না এলজিআরডি অফিস করে থাকে। আপনারা সেখানে কথা বলুন।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিআরডি) জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এলজিএসপির কাজের দায়িত্ব তো আমাদের না। আমরা শুধু স্টেমেট তৈরি করে দেই। বাকিটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেখভাল করেন।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, খালটির যে প্রশস্ততা, তাতে সেখানে কালর্ভাট হওয়ার কথা না। সেখানে ব্রিজ হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু কালভার্টটি বছর দশেক আগে করা হয়েছে, আমি তো তখন ছিলামই না। তাই এটি কেন এত ছোট আকারে নির্মাণ করা হয়েছে আমি সেটার জবাব দিতে পারবো না। তবে, আমরা পরবর্তী বরাদ্দ এলে বিষয়টি মাথায় রেখে কালভার্টটি ভেঙে সেখানে ব্রিজ নির্মাণের চেষ্টা করবো।

আরিফ আজগর/এমএএস