খুলনায় দুই দিনের গণপরিবহন ও লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রত্যাহার করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টা ট্রলার বন্ধের সিদ্ধান্তও। শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেল থেকে ঘাটে ট্রলার চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে গণপরিবহন ও লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যায়। ফের সচল হয়েছে খুলনার সড়ক ও স্থলপথ।  

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করে বলেন, খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশ ঠেকানোর জন্য এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। যাতে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে না পারেন। তবে কোনো বাধাই নেতা-কর্মীদের সমাবেশে আসা ঠেকাতে পারেনি। সকল বাধা অতিক্রম করে নেতা-কর্মীরা সমাবেশ সফল করেছেন। খুলনার সমাবেশে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। সমাবেশ শেষ এখন তারা আবার সব চালু করেছে। এই ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, মালিকরা দুই দিন পরিবহন ধর্মঘট ডাকে। সেই ধর্মঘটে শ্রমিকরাও একাত্মতা প্রকাশ করে। শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া এই ধর্মঘট চলে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। দুপুরে পরিবহন চলাচল শুরু হয়। এখন বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।  

রূপসা ঘাট মাঝি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ ব্যাপারী বলেন, আজ সন্ধ্যায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মাঝি সমিতি, পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়। বৈঠকে আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলে সন্ধ্যা থেকে রূপসা ঘাট থেকে নৌকা, ট্রলার চলাচল শুরু হয়। এখন যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। 

বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে আমরা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছিলাম। শুক্রবার রাতে মালিক-শ্রমিক পক্ষের বৈঠকে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে শনিবার সকাল থেকে লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। তবে সকালে যাত্রী না থাকায় দুটি লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চারটি লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে গেছে।  

এদিকে ৩৬ ঘণ্টা পর বাগেরহাটে গণপরিবহণ চলাচল শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৫টা থেকে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লা ও স্থানীয় সকল রুটে বাস ছেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে মাহিন্দ্রা, ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

এর আগে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নছিমন-করিমন বন্ধের দাবিতে মালিক সমিতির ডাকা দুই দিনের ধর্মঘটের অংশ হিসেবে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ভোর থেকে বাগেরহাটে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

অন্যদিকে টানা ৩৬ ঘণ্টা পর যশোর থেকেও খুলনাসহ সারাদেশের সঙ্গে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন যশোর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু। 

তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টা থেকে খুলনার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। যাত্রীরা আসছে-যাচ্ছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর