গত শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জামায়াতুল আনসারের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত কাওসার আহমেদ ওরফে শিশিরের (৪৬) বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হারুনদিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত গোলাম কিবরিয়া।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে কাওসার সবার বড়। বোনেরা সবাই বিবাহিত। ছোট ভাই কেরামত আলী গাড়ির ড্রাইভার পাশাপাশি গরু পালন ও কৃষিকাজ করেন । সবার ছোট ভাই সোহরাব হোসেন কোরআনের হাফেজ।

কাওসার ভাই কেরামত আলী ও সোহরাব হোসেন জানান, আনুমানিক দুই বছর আগে কাওসার নিরুদ্দেশ হন। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা শৈলকুপা থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ কাওসারের ছবি না থাকায় জিডি গ্রহণ করেনি। আজই তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে তার গ্রেপ্তারের খবর জানতে পারেন। 

কাওসারের বাড়িতে মা ঝরনা বেগম, ছোট ভাই কেরামত আলী, কেরামতের স্ত্রী ও সন্তান একটি সেমি পাকা ঘরে বসবাস করেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিরুদ্দেশ থাকাকালে কাওসার পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি। তার তিনজন স্ত্রী। প্রথমে পার্শ্ববর্তী হড়রা গ্রামে বিয়ে করেন এবং সেই স্ত্রী সন্তান প্রসবের সময় মারা যান। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি ঝিনাইদহ জেলা শহরে আবার বিয়ে করেন। সেখানে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রামে এক নারীকে বিয়ে করেন। যার নাম-ঠিকানা পরিবারের কেউ জানেন না। 

এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে কাওসার আর পড়াশোনা করেনি। প্রথম দিকে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। পরবর্তীতে এলাকায় ফিরে এসে স্থানীয় গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে লেপ-তোষকের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর কিছুদিন মোবাইল ফোনের ব্যবসা করেন। এলাকায় তিনি একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। নামাজ পড়েতেন। আচার-আচরণও ভালো ছিল বলে প্রতিবেশীরা জানান। তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকাবাসী বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অনেকেই ধারণা করেছিলেন কাওসার হয়তো বেঁচে নেই। তবে তার জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে এলাকাবাসী বিস্মিত।  

শৈলকুপা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার জামাতুল আনসারের সদস্য কাওছার ওরফে শিশিরের বাড়ি শৈলকুপার হারুনদিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম গোলাম কিবরিয়া। তাকে নিয়ে তদন্ত চলছে ।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরএআর