মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের লাল শাপলার রাজ্য ডিবির হাওর। বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত স্থানটি ইতোমধ্যে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। তাইতো প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।

জানা যায়, সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে ডিবি বিল, ইয়াম বিল, হরফকাট বিল, কেন্দ্রী বিলসহ ৯০০ একরের এই লাল শাপলার রাজ্যে প্রতি বছর শরতের শেষ দিকে শাপলা ফুটতে দেখা যায়। গত কয়েক দিন থেকে এখানে নতুন ফুল ফোটায় বাড়ছে পর্যটক। তাদের জন্য স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিলটি সংরক্ষণের জন্য স্থানীয়দের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটিও আছে। নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে হাওর ঘুরে কাছ থেকে লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে নৌকার বিশেষ ব্যবস্থা।

পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় শাপলা বিল সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা পর্যটকদের বরণ করার অপেক্ষায় আছি। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে ভ্রমণপিপাসুদের সেবার জন্য প্রস্তুত।

অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ডিবির হাওরে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা লোকজনও বেশ উচ্ছ্বসিত। পানির ওপর ভেসে থাকা লাল শাপলার গালিচা তাদের মন জয় করে নিয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাক্তার হিমাংশু লাল রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি বছর শীতে আমি এখানে ঘুরতে আসি। এখানে এলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। প্রকৃতি যে কত সুন্দর তা এখানে না আসলে বোঝা যেত না।

পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিবির হাওরে সব সময় আমাদের টহল টিম থাকে। বিশেষ কোনো দিনে বা ছুটির সময় আমি নিজে এখানে অবস্থান করি। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা সদা তৎপর রয়েছি।

যেভাবে যাবেন ডিবির হাওরে 

সিলেট নগরীর সোবহানীঘাট থেকে জাফলংগামী বাসে করে যাওয়া যাবে জৈন্তাপুর বাজারে। সেখান থেকে ব্যাটারিচালিত টমটম বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে সরাসরি বিলে যাওয়া যাবে। সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বাসের ভাড়া জন প্রতি ৯০ টাকা আর টমটম বা সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া জৈন্তাপুর বাজার থেকে ৩০ টাকা করে।

এছাড়া সিলেট নগরী থেকে সরাসরি বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা লেগুনা রিজার্ভ করেও যাওয়া যাবে ডিবির হাওরে। আর হাওরে নৌকা নিয়ে ঘুরতে হলে এক ঘণ্টার জন্য খরচ করতে হবে ৪০০ টাকা।

এসপি