বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দ্বিতীয় দিনের মতো বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। সেইসঙ্গে হালকা দমকা হাওয়া বইছে। বরগুনা উপকূলে সাড়ে ৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় আতঙ্কিত এসব এলাকার বাসিন্দারা।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলায় পাউবোর ২২টি পোল্ডারের আওতায় ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্বল বা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে ৯ কিলোমিটার। 

জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলায় ১ কিলো ৭০০ মিটার, তালতলীতে ৫০০ মিটার,  বামনায় ৯৫০ মিটার, আমতলীতে ১ কিলো ৯৭০ মিটার, বেতাগীতে ৩০০ মিটার এবং পাথরঘাটায় ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। এসব স্থানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উচ্চ জলোচ্ছ্বাস হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে পারে। তবে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, যদি কোথাও পানির চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড পাঁচ হাজার জিওব্যাগ প্রস্তুত রেখেছে। আরও ১০ হাজার জিও ব্যাগ তাদের সংগ্রহে রাখা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৫০০ সিনথেটিক ব্যাগ সংগ্রহে রেখেছে।

বরগুনার তালতলী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের হাশেম মাঝি বলেন, আমাদের এখানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অমাবস্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উচ্চ জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। যদি পানি বৃদ্ধি পায়, তাহলে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাবে। আর যদি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়, তাহলে পরিবারের লোকজন নিয়ে নিশ্চিত মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়বো আমরা। কারণ তেঁতুলবেড়িয়া থেকে বঙ্গোপসাগরের দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। তাই আমিসহ এ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, বরগুনার ৬ উপজেলায় ৯ কিলো ৪২০ মিটার বেড়িবাঁধ দুর্বল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উচ্চ জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হলে এসব বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সতর্ক রয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক মোকাবিলার জন্য জিও ব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। ঝড়টি পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এতে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

খান নাঈম/এসপি