ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাতিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। 

জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাতিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত বলে গণ্য করা হয়। মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। 

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিঝুম দ্বীপে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বান্ধাখালী, মোল্লা গ্রাম, মুন্সি গ্রাম ও মদিনা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়ায় অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জনপদের নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় ম্যানেজিং বোর্ডের সদস্য ও নোয়াখালী ইউনিট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা গতকাল ইউনিট কার্যালয়ে জরুরি সভায় মিলিত হয়েছি। আজ সকালে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি যৌথ সভায় মিলিত হয়েছি। ইউনিট ফান্ড থেকে ৫ লাখ টাকা তাৎক্ষণিক বরাদ্দ রেখেছি। রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপির প্রশিক্ষিত ভলেন্টিয়ার ইতোমধ্যে উপকূল অঞ্চলে মাইকিং করছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরবর্তী নির্দেশনার আলোকে মাইকিংয়ের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় হাতিয়াতে ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৩ হাজার ৫৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানে আমরা সহায়তা পৌঁছে দেবো।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালীর হাতিয়া, সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৩ লাখ লোক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৪০১টি আশ্রয়ণকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১০১টি মেডিকেল টিম ও ২৫০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৭০০ কার্টন বিস্কুট মজুত রাখা হয়েছে।

হাসিব আল আমিন/এসপি