ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝুঁকিতে থাকা কক্সবাজারের মহেশখালীসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে প্রশাসন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারির পর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে থাকা লোকজনকে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। 

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফের অন্তত এক লাখ মানুষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তাদের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের লোকজনকে ইতোমধ্যে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। 

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন জানান, উপজেলার মাতারবাড়ি, ধলঘাটা ও কুতুবজোমসহ মহেশখালীতে অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। দুপুরের পর থেকে তাদের সরিয়ে আনার কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। 

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান, কুতুবদিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে সাত থেকে আট হাজার মানুষ। তাদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক লোক আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সন্ধ্যার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সব লোকজনকে সরিয়ে আনা হবে। 

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সেন্ট মার্টিনের পুরো ইউনিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে অতি ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সকল সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম। ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ১০ লাখ টাকা, ২৯৮ মেট্রিক টন চাল, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ১৮০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক ও ১০৮টি মেডিকেল টিম। সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জাহিদ ইকবাল বলেন, কক্সবাজারের আট উপজেলায় পাঁচ লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অতি ঝুঁকিতে রয়েছে এক লাখ মানুষ। তাদের সন্ধ্যার আগেই সরিয়ে নিতে প্রতিটি উপজেলার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা কাজ শুরু করেছেন। লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসছে।

সাইদুল ফরহাদ/আরএআর