নড়াইলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারাদিন ভারি বর্ষণ ও তীব্র বাতাসে সড়কের ওপর শতবর্ষী বটগাছ পড়ে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে কালনা- নড়াইল মহাসড়কের নড়াইল সদরের মাদরাসা বাজার নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলের দিকে বাতাসের গতি অনেক বেশি ছিল। হঠাৎ করে মড়মড় শব্দে বটগাছটা রাস্তার ওপর উপড়ে পড়ে। তবে রাস্তা ফাঁকা থাকায় কোনো ধরনের ক্ষতি হয়নি। 

এতে করে মাদরাসা বাজারের পূর্ব পাশে কালনা অংশে ৩ কিলোমিটার ও মাদরাসা বাজারের পশ্চিম অংশে আড়াই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আটকা পড়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রায় সাড়ে তিনশত যানবাহন।

বেনাপোল বন্দর, ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে আটকে পড়া যানবাহনের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীসাধারণসহ পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা।

ট্রাকচালক ইমন বলেন, বেনাপোল থেকে ফল বোঝাই করে এসেছি, যাব চিটাগাং। রাস্তার যা অবস্থা তাতে কেমনে যাব? ফল তো সব পচে যাবে মনে হচ্ছে। 

বাস যাত্রী আমানুল্লাহ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কাজ করছে। কিন্তু এতো অল্প লোক আর এই কয়টা যন্ত্রপাতি নিয়ে কয়দিনে রাস্তা পরিষ্কার করবে বুঝতেছিনা। 

নড়াইল সদর ফায়ার স্টেশনের সাব অফিসার শফিকুল ইসলাম উদ্ধার কাজে এসে ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ না করায় আমাদের খবর পেতে দেরি হয়েছে। এটি অনেক বড় একটি গাছ। অন্যান্য গাছের মতো বটগাছ অপসারণ অতিদ্রুত সম্ভব হয় না। আমাদের লোকবল সংকট। উদ্ধারে যন্ত্রপাতি অপর্যাপ্ত। তার মধ্য দিয়ে আমরা অতি দ্রুত অপসারণ করার চেষ্টা করছি। 

নড়াইল ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মাহাবুব আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এতো বড় গাছ অপসারণের জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি আমাদের নেই। এক নাগাড়ে ৩ ঘণ্টা কাজ করার পর ছোট যানগুলো চলার উপযোগী করা সম্ভব। তবে পুরো গাছ অপসারণ করে পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে উপযোগী করতে আমদের সময় লাগবে। 
 
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারাদেশে ভারি বর্ষণ ও ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা খুলনা বিভাগীয় অফিসের সহায়তা চেয়েছি।

নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ ও স্থানীয় জনগণ গাছ অপসারণে কাজ করছে। মূলত একক রোড হওয়ায় যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমরা কন্ট্রোলরুমে ম্যাসেজ দিয়েছি। অতি প্রয়োজনীয় গাড়িগুলো যেন নড়াইলের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে। সেখানকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন আছে।

সজিব রহমান/এমএএস