পিকআপ ও ভটভটি ভর্তি মানুষ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। ব্যান্ড পার্টি ও বাদ্যের বাজনার তালে তালে নাচ-গান করছেন। এতে আগ্রহ করে মানুষরা ভিড় জমাচ্ছেন। এভাবেই ভোটের প্রচারণা চালিয়ে বেড়াচ্ছেন আলী আজম সাথী নামে তৃতীয় লিঙ্গের এক ব্যক্তি।

আলী আজম সাথী (৫৮) এবার জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করছেন। আগামী ২ নভেম্বর এই ইউনিয়নের নির্বাচন। প্রার্থী হওয়ার পর থেকে সব শ্রেণির ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন বলে জানান আজম।

আজম বড়তারা ইউনিয়নের হোপ গ্রামের মৃত জহুরুল হক মণ্ডলের সন্তান। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সাথী সবার বড়। তিনি ১৯৭৭ সালে পাঠানপাড়া হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৯ সালে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ (তৎকালীন নাম জয়পুরহাট কলেজ) থেকে আইএ পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেননি।

আলী আজম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি বড়তারা দুই নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নির্বাচন করছি। আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমার প্রতীক চশমা। আমার বউ-বাচ্চা কিছুই নেই। আমি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। নির্বাচনে জয়ী হকে পারলে জনসেবা করব।’

তিনি বলেন, ‘পাস করতে পারলে সরকারের অনুদান যা আসবে সকলের মাঝে তা বিলিয়ে দেব। আমার কোনো স্বার্থ নেই। নির্বাচনে ভোটারদের খুবই সাড়া পাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ পাস করব।’

আল-আমিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের আজম আলী সাথীর ব্যবহার খুবই ভালো। জনগণের কারণেই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন।

আজম আলী সাথীর ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আলী আজম আমার বড় ভাই। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের। ইউপি নির্বাচনে এবার চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের মাঠে তিনি ভালো পর্যায়ে আছেন। ভোটাররাও সাড়া দিচ্ছেন। আশা করা যায় তিনি পাস করতে পারবেন। 

যামুহালি গ্রামের রাজ্জাক হোসেন বলেন, আমাদের বড়তারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী হয়েছে। যেই জয়ী হোক, উন্নয়নমূলক কাজ করলেই হলো।

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার আনিছার রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী ২ নভেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ও তুলসীগঙ্গা ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বড়তারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও তুলসীগঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বড়তারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় লিঙ্গের একজন প্রার্থী আছেন।

চম্পক কুমার/এসপি