ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় দুই শতাধিক খামারে গরু পালন করেন বিভিন্ন পর্যায়ের খামারিরা। সম্প্রতি জেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে গরু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। দিন দিন এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন, সালান্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় গরুর শরীরে ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীর হঠাৎ গরম হয়ে যায়। প্রথমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছোট আঁচিলের মতো ফুলে ওঠে। একপর্যায়ে চামড়া উঠে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ রোগে আক্রান্ত গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। আক্রান্ত পশুর চামড়ায় প্রথমে ফোসকা পড়ে। একপর্যায়ে সেই স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। চিকিৎসা করেও তেমন প্রতিকার পাচ্ছেন না খামারিরা। অনেক সময় মৃত্যু ঘটছে আক্রান্ত গরুর। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। 

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, জেলায় ২০৩টি খামারে ২১০০টি গরু লালন-পালন করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে ৩৭টি, বালিয়াডাঙ্গীতে ১১টি, পীরগঞ্জে ৪৫টি, রাণীশংকৈলে ৯০টি ও হরিপুর উপজেলায় ২০টি গরুর খামার রয়েছে। 

সদর উপজেলার সালান্দর চৌধুরীহাট গ্রামের খামারি নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ১০ বছর থেকে গরু লালন-পালন করে আসছি। এবারেই প্রথম আমার গরুর এই রোগটি হয়েছে। অনেক দুশ্চিন্তায় আছি গরুগুলো নিয়ে। প্রতিদিন এক হাজার টাকার বেশি খরচ হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো সুস্থ হয়নি গরু। 

সদরের আঁকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের খামারি প্রফুল্ল বর্মন বলেন, আমার একটা গরু এ রোগে মারা গেছে। আমি আগে জানতাম না এটা কী রোগ। গ্রামের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রথমে চিকিৎসা দেই। পরে রোগ সম্পর্কে জানার পর পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার একটা গরু এখন সুস্থতার পথে। 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, লাম্পি স্কিন একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি মারাত্মক কোনো রোগ নয়। মশা-মাছিবাহিত এই রোগটি নিয়মিত ওষুধ খাওয়ালে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। এ বিষয়ে খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এম এ সামাদ/আরএআর