পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস বন্ধ থাকায় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানে চড়ে রওনা হয়েছেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির ১৩টি উপজেলার হাজারো নেতা-কর্মী। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে দিনাজপুর জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার রহমান কচির নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কয়েকশ মোটরসাইকেল নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যে বের হন। 

মোটরসাইকেলের বহরে থাকা চিরিরবন্দর উপজেলা বিএনপির সদস্য বাদশা বলেন, সরকার বাস-ট্রাক বন্ধ করে দেওয়ার একদিন আগেই সমাবেশ অংশ নিতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছি। সাথে আরেকজন কর্মীকেও নিয়েছি। সরকার আমাদের আগের তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ দেখে ভয় পেয়ে পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার যতই কঠোর হোক না কেন আমাদের কালকের সমাবেশ সফল হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান মিয়া বলেন, সরকার চট্টগ্রামে বিএনপির প্রথম সমাবেশ দেখে ভীত হয়ে পড়ে। তাই ময়মনসিংহ ও খুলানার জনসভায় বাস-ট্রাক বন্ধ করে বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। আমরা সরকারের কৌশল দেখে রংপুরের সমাবেশের আগে আমাদের নেতা-কর্মীদের নিজ নিজ মোটরসাইকেল ও তাদের মোটরসাইকেলের পেছনে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যেতে বলেছি। নেতা-কর্মীরা সমাবেশের এক দিন আগেই রংপুরে যাওয়া শুরু করেছে। আগামীকাল সকাল ৯টার দিকে আমার সংসদীয় আসন থেকে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার নেতা-কর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে রংপুরের সমাবেশে রওনা দেবে। সরকার বাস-ট্রাক বন্ধ করে আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ সরকারের পতন ঘটাতে আগামীকাল রংপুরের সমাবেশে বিপুল পরিমাণ লোকসমাগম হবে।

দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার রহমান কচি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের পরিকল্পিত পরিবহন ধর্মঘটসহ কোনো বাধাই আমাদের আটকাতে পারবে না। আমরা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে রংপুরে সমাবেশস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। পথে কোনো বাধা এলে প্রয়োজনে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে অনেক নেতা-কর্মী রংপুরে পৌঁছে গেছেন। তারা শুকনো খাবার, শীতের কাপড় ও ঘুমানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়েছেন। তাছাড়া আজ রাতে ও কাল সকালে সমাবেশে যোগ দেবে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার নেতা-কর্মী। সব উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করা হবে। কালকের রংপুরের গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রংপুর বিভাগের আট জেলার যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। মহাসড়কে নসিমন, করিমন ও থ্রি হুইলারসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। 

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ গণসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। 

ইমরান আলী সোহাগ/আরএআর