গাজীপুরের শ্রীপুরে সুলতান উদ্দিন হত্যা মামলায় তার দুই ভাইয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক বাহাউদ্দিন কাজী এ রায় দেন।  

নিহত সুলতান উদ্দিন শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা এলাকার ধনাই বেপারীর ছেলে। 

আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুলতান উদ্দিনের দুই ভাই মো. মাইন উদ্দিন (৬৫) ও আবুল কাসেম বেপারী (৬০)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- স্থানীয় আব্দুল কাদিরের ছেলে দুলাল উদ্দিন (৫০), ধনাই বেপারীর ছেলে আব্দুল মান্নান (৫৫), বেলতলী এলাকার সোনা উল্লাহর ছেলে মাইন উদ্দিন (৬০) ও একই এলাকার শুক্কুর আলীর ছেলে মো. আজিজুল হক (৬০)। মো. গিয়াস উদ্দিন (৬০) নামে এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। 

নিহতের ছেলে ও বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাহাদুর জানান, জমি-জমা নিয়ে সুলতান উদ্দিন ও আসামিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। ১৯৯৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে সুলতান উদ্দিন, তার ভাই মোতাহার হোসেন ও প্রতিবেশী মুজিবুর রহমান নিজ বসতবাড়ির পশ্চিমের ঘরে বসে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে আলাপ আলোচনা করছিলেন। পরে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ আসামিরা আরও কয়েকজনকে নিয়ে ওই ঘরের খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে ঢোকেন। একপর্যায়ে সুলতান উদ্দিনকে ধরে বুকে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে ও গুলি করে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেন। এ সময় সুলতানের দুই ছেলে মোবারক হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ বাবাকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। পরে তাদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে আসামিরা গুলি করতে করতে পালিয়ে যান। পরদিন সুলতানের ভাই মো. মোতাহার হোসেন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।

১৯৯৭ সালে গাজীপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিন শুনানি ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় দেন আদালতের বিচারক।

আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাহাদুর বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন আগে আসামিদের কয়েকজন আমার বাবা সুলতান উদ্দিনকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তখন থানায় জিডি করা হয়। জিডির ১৫ দিন পরই বাবাকে হত্যা করা হয়। 

শিহাব খান/আরএআর