রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পরিচয় গোপন করে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ধর্মীয় উসকানিমূলক বার্তা প্রচারের দায়ে দুই যুবকের ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আলাদা তিনটি ধারায় এই কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দেড় বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এনায়েতউল্লাহপুরের সৈয়দপুর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ওয়াসিম আল রাজী (৩৩) ও একই উপজেলার অলোকছত্র এলাকার নওশের আলীর ছেলে নাসিম আলী (২০)। রায় ঘোষণাকালে তারা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। 

রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ইসমত আরা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৪ (১), ২৮ (১) এবং  ৩১ (১)/৩৫ ধারায় দুজনেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আদালত প্রত্যেককে একই আইনের ২৪ (২), ২৮ (২) এবং  ৩১ (২) ধারায় ৫ বছর করে মোট ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

আদালত জানিয়েছেন, পর্যায় ক্রমে তিনটি ধারায় সাজা কার্যকর হবে। তবে আসামির হাজতবাস মূল কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে। 

মামলার বিবরণে পিপি জানান, পরিচয় গোপন করে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ধর্মীয় উসকানিমূলক বার্তা বিভিন্নজনের মাঝে ছড়িয়ে দেন এই দুই যুবক।

এ নিয়ে এলাকায় মুসলিম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে সংঘাত সৃষ্টির উপক্রম হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পরে বার্তা পাঠানো ফেসবুক আইডি মুছে দেন। সাধারণ ডায়েরির প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১ আগস্ট গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একটি দল ওয়াসিম আল রাজী ও নাসিম আলীকে গ্রেপ্তার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন বার্তা ছড়িয়ে দেন বলে স্বীকার করেন। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

 ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর