নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করার জন্য চালকদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। কিন্তু মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে ডোপ টেস্টের কিট না থাকায় সাড়ে তিন মাস ধরে ডোপ টেস্ট বন্ধ রয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যক্তিরা ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু,নবায়ন ও নতুন সরকারি চাকরি প্রত্যাশীরা নানান হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মাদারীপুর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সারাদেশে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করে সরকার। মাদারীপুর জেলায় ডোপ টেস্ট চালু হয় গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। কিন্তু কিট না থাকার কারণে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ডোপ টেস্ট। এতে চালকরা বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ডোপ টেস্টের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাইসেন্স প্রাপ্তিতে আধুনিক ও সহজলভ্য করতে না পারলে অবৈধ চালকের সংখ্যা বাড়তে পারে।

মাদারীপুর কালকিনি উপজেলার পেশাদার মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী মো. রায়হান হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, হঠাৎ বিআরটিএ নিয়ম করেছে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট লাগবে। আমি লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ অফিসে লিখিত, ভাইভা ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। গত আগস্ট মাসে বিআরটিএ অফিস আমার ডোপ টেস্ট করার জন্য মাদারীপুর  সিভিল সার্জন অফিসে চিঠি দিয়েছে। সেখানে গিয়ে শুনলাম মাদারীপুরে এই পরীক্ষা হয় না। তাহলে আমরা কী করব? পাঁচ মাস ধরে লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন হচ্ছে না। রাস্তায় নামলে পুলিশ হয়রানি করে।

ডোপ টেস্ট করতে আসা রবিউল আলম জানান, আমি বিদেশ যাব তাই জরুরি টেস্ট দরকার ছিল। হাসপাতালে এসে দেখি ডোপ টেস্ট বন্ধ। এখন আমি কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।

মোটরসাইকেলচালক মারুফবিল্লাহ বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক আছে। এখন আমি ডোপ টেস্ট করলেই কাগজগুলো নবায়ন করতে পারব। কিন্তু হাসপাতালে এসে দেখি টেস্ট বন্ধ। লাইসেন্স নবায়ন না হলে তো আমি গাড়ি নিয়ে রাস্তা বের হতে পারব না।

মাদারীপুর বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মাহাবুব হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে জানান, মাদারীপুর অঞ্চলের চালকদের লাইসেন্সের জন্য রাস্তাঘাটে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। মামলার ভয়ে চালকদের অনেকেই আন্তঃজেলা বাস চালাতে চাচ্ছেন না।

মাদারীপুর বিআরটিএ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুব কামাল বলেন, আমরা নিয়মিত ডোপ টেস্ট করার জন্য মাদারীপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকারীদের তালিকা পাঠাচ্ছি। কিন্তু টেস্ট কিট ফুরিয়ে যাওয়ায় ডোপ টেস্ট করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বরাদ্দ এনেছি। টেন্ডারের মাধ্যমে কিট ক্রয় করা হবে। আশা করি ১৫ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান হবে।

রাকিব হাসান/এমজেইউ