ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা

পাবনায় এক নারী শ্রমিকের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তআরও অনেকেই এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

রোববার (৬ নভেম্বর) সকালে দুজনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম। শুক্রবার রাতে উপজেলার বলরামপুরের ইন্ট্রা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির পেছনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ইন্ট্রা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফ্লোর সুপারভাইজার শ্যামলী খাতুন (ছদ্মনাম) প্রতিদিন কাজ শেষে কারখানার আরেক কর্মী সাব্বিরের সঙ্গে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু শুক্রবার সাব্বিরকে আগেভাগেই ছুটি দেন কারখানার আরেক সুপারভাইজার শাহ আলম। সাব্বির বিকেলে বাড়ি ফেরায় এদিন রাত ৯টার দিকে একাই বাড়ি ফিরছিলেন শ্যামলী।

এ সময় শাহ আলম তাকে বাড়ির পথে এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে তার সঙ্গে রওনা হন। কিছুদূর গিয়ে নির্জন স্থানে প্রথমে শাহ আলম তাকে জড়িয়ে ধরে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। এ সময় শ্যামলী তাকে ধাক্কা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। শ্যামলীর মোবাইল ছিনিয়ে নেন। একটু দূরে গিয়ে কারোর সঙ্গে কথা বলেন। এর মাত্র ১-২ মিনিটের মধ্যেই সেখানে আরও ৭-৮ জন যুবক এসে তাদের ঘিরে ধরে।

যুবকরা প্রথম শ্যামলীর গলা ধরে আরেকটু নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় শ্যামলী চিৎকার দিতে গেলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে খবর দিয়ে সেখানে হাজির করা হয় সাব্বিরকেও। সাব্বির ও শাহ আলমকে আটকে রেখে শ্যামলীর গলায় ছুরি ধরে তাকে কয়েকজন নিয়ে যায় ইন্ট্রা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের পেছনে। সেখানে তিনি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। 

ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের আগে পুলিশের কাছে দেওয়া অভিযোগে যাদের নাম ছিল, তারা হলেন- ছাত্তার মেম্বারের ছেলে বাদশা, দলু খাঁর ছেলে আতিয়ার, রশিদ মুন্সির ছেলে রাজিব, আমজাদ খাঁর ছেলে মনির, শুকুর ধুরার ছেলে আশরাফ, বশির শেখের শেখ সাদী ও কাসেম শেখের ছেলে সাঈদ শেখ। তারা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ঘটনার পর থেকেই তারা লাপাত্তা।

সদরের দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম রবি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা ইতোমধ্যেই তাদের (অভিযুক্ত) চিহ্নিত করেছি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে। জড়িতদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা দুইজনকে (সাব্বির ও শাহ আলম) গ্রেপ্তার করেছি। আরও কিছু নাম-ঠিকানা কিছু পেয়েছি। শিগগিরই তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

রাকিব হাসনাত/আরএইচ