সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ হলো জেলার ২০ লাখ মানুষের। সিলেটবাসী পেল বিভাগের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু। 

সোমবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে রাণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা  প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ। ভিডিও কনফারেন্সে প্রশাসন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর -শান্তিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

সেতু উদ্বোধন শেষে সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল নৃত্য ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের লেখা বাউল গান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জবাসীকে অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে অনুষ্ঠানস্থলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ জড়ো হন। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। 

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭০২ মিটার লম্বা রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে  সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। রঙিন সাজে স্বপ্নের সেতু দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। পুরো সেতু জুড়ে ছিলো পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী। 

অনুষ্ঠানে আসা স্থানীয়রা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই সেতু আমাদের কাছে পদ্মা সেতুর মতো। আমাদের অনেক বছরের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। দীর্ঘদিনের কষ্ট, ভোগান্তির শেষ হয়েছে।

আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ বলে, এই সেতু হওয়ায় আমাদের সুবিধা হয়েছে। আমরা ফেরি থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা সঠিক সময়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতে পারব। 

ফয়জুর রহমান বলেন, আমি আজ আমাদের স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতুতে। যাকে আমাদের পদ্মা সেতু বলা হয়। সারা সুনামগঞ্জে উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। সিলেট হয়ে আমাদের ঢাকা যেতে অনেক সময় লাগত ও টাকা খরচ হতো। এই সেতুর মাধ্যমে তা কমে গেল। 

স্থানীয় কামরুল ইসলাম বলেন, এই সেতু উদ্বোধন হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী তথা সুনামগঞ্জবাসী আনন্দিত। সেতু হওয়ায় আমাদের ব্যবসা, চিকিৎসাসহ অনেক সুবিধা হয়েছে। আমরা আড়াই ঘণ্টা সময় বাঁচিয়ে সুনামগঞ্জ-ঢাকা আসা যাওয়া করতে পারবো। 

ব্যবসায়ী সুহেল তালুকদার বলেন, সেতু হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীদের অনেক লাভ হবে। আমরা কম সময়ে পণ্য ঢাকায় পাঠাতে পারব। আমরা অনেক খুশি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমে এসেছে। মানুষের সময় সাশ্রয় হবে। সেতু চালুর মাধ্যমে এই অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং পর্যটন শিল্পের দ্বার খুলে যাবে। 

সোহানুর রহমান সোহান/আরএআর