সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কুড়া উদয়পুর গ্রামের মৃত সাইদুল ইসলামের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৫৭)। ১৩ বছর আগে স্বামীকে হারান। দুই মেয়ে ও প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে রাস্তার পাশ থেকে শাক তুলে হাটে-বাজারে বিক্রি শুরু করেন। তার অসহায়ত্ব দেখে দ্য বার্ড সেফটি হাউজের চেয়ারম্যান সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস এগিয়ে আসেন। 

তিনি অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ৭৪ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। ওই টাকা দিয়ে একটি গরু, ছাগল, খাদ্যসামগ্রী ও পোশাক কিনে সোমবার (০৭ নভেম্বর) বিকেলে পরিবারটির হাতে তুলে দেন। এ সময় নগদ ১১ হাজার টাকাও তুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেক কষ্টে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন সাহিদা। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে সাহিদা জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত। প্রতিদিন ভোরে ছেলেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে জীবিকার সন্ধানে বের হন। রাস্তার পাশ বা ক্ষেত্রের আঁইল থেকে শাক ও কচু সংগ্রহ করে বাড়িতে এনে পরিষ্কার করে সেইগুলো বিকেলে হাটে নিয়ে বিক্রি করেন। কখনো কখনো অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। পাশাপাশি মা-ছেলে ভাতা কার্ড থেকে যা পান তা দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। 

সাহিদা বেগম বলেন, আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। ছেলেকে বেঁধে রেখে প্রতিদিন জীবিকার জন্য বের হতাম। মামুন বিশ্বাস আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাকে এখন আর এভাবে বাইরে যেতে হবে না। চেষ্টা করব গরু-ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার। মামুন বিশাসের জন্য দোয়া করি, তিনি যেন সব সময় এভাবে অসহায়দের পাশে দাঁড়ান।

সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, মানবতার টানে ছুটে চলি। ফেসবুকের মাধ্যমে সমাজের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে পারলেই আমার ভালো লাগে। 

তিনি আরও বলেন, এতিম সন্তানসহ পরিবারের চার সদস্যের জন্য এটা সামান্য উপহার হিসেবে দিয়েছেন আমার ফেসবুক বন্ধুরা। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।

শুভ কুমার ঘোষ/এসপি