ধসে পড়েছে সড়কের সুরক্ষা দেয়াল ও স্লাব

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় হয়ে ঘোষেরহাট পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার সড়কটির এখন বেহাল দশা। ৪ মাস যেতে না যেতেই ধসে পড়েছে সুরক্ষা দেয়াল ও স্ল্যাব, ভাঙন দেখা দিয়েছে মূল সড়কেও। এটি নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এত দ্রুত ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অফিস থেকে  জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জেলা শহরের ইটেরপুল থেকে পাথুরিয়ারপাড় হয়ে ঘোষেরহাট পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয়। বরিশালের মাহফুজ খান লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় কাজটি পায়। সড়কটির নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের ৮ জুলাই শুরু হয়ে ২০২০ সালের ৭ জুলাই কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করে চলতি বছরের ২৫ জুন সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ হয়। সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কটির অন্তত ১৫ স্থানে সুরক্ষা দেয়াল ও স্ল্যাব ধসে পড়েছে, ভাঙন দেখা দিয়েছে মূল সড়কেও।

করদি এলাকার বাইজিদ হাওলাদার বলেন, রাস্তার দেয়ালগুলো দ্রুত মেরামত না করলে যান চলাচলে বিপদজনক হয়ে পড়বে। আমরা চাই রাস্তাটি তাড়াতাড়ি মেরামত করা হোক। তাহলে ঠিকমতো যানবাহন চলতে পারবে। 

ধুলুগ্রাম গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার আতিকুল কবির বলেন, ‘রাস্তাটি কয়েক মাস আগে কাজ শেষ করছে। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তার পাশের গাইড ওয়াল ধসে গিয়ে খালে চলে গেছে। মূল সড়কেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন গাইড ওয়াল দ্রুত সংস্কার করা না হলে সড়ক দিয়ে বড় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হবে। দ্রুত সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা দরকার। 

ছয়না গ্রামের বাসিন্দা আলি হোসেন মাতুব্বর  বলেন, ‘এই রাস্তাটি দিয়ে অনেক গাড়ি চলাচল করে। কাজ এতই নিম্নমানের হয়েছে যে রাস্তার পাশের স্ল্যাবগুলো এক বৃষ্টিতেই ধসে গেছে। তাই এই নিম্নমানের কাজে সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

মাদারীপুরের সনমন্ডি গ্রামের বাসিন্দা সায়েম হোসেন বলেন, ‘আমি প্রায়ই এই সড়কটি ব্যবহার করে যাতায়াত করি। সড়কটি চলতি বছরেই ৪১ কোট টাকারও বেশি খরচ করে তৈরি করা হয়েছে। অথচ ৪ মাসেই সেটা ভেঙে গেল। এত টাকার রাস্তা অবশ্যই খারাপ মানে তৈরি করা হয়েছে। তাই দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহফুজ খান লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সিত্রাংয়ের প্রভাবে সড়কটির দেয়াল ধসে গেছে। আমরা সেটা মেরামত করে দেব। এই সময়ে তাকে প্রশ্ন করা হয় জেলার অন্য সড়কগুলোতে সিত্রাংয়ের প্রভাবে এতটা ভেঙে যায়নি। এই সড়কটি কেন ভেঙে গেল? তখন তিনি বলেন, অন্য সড়কের কথা আমার জানা নেই। আমরা আমাদেরটা মেরামত করে দেব।’

তবে মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্মাণকাজে নিম্নমানের উপকরণ তৈরি করা হয়নি। সড়কটির সুরক্ষা দেয়ালের ভেঙে যাওয়া অংশগুলো ঠিকাদারকে দিয়ে দ্রুত ঠিক করে দেয়া হবে।

রাকিব হাসান/আরকে