চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প ব্রিজিং

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প ব্রিজিং (সিডিএসপি-বি) এর উদ্যোগে ভূমিহীন ১০০ পরিবারের মাঝে ৭০১ টাকায় প্রায় দেড়শ একর কৃষি খাস জমির খতিয়ান বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার যোবায়ের বাজারের এসএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব পরিবারের সদস্যদের হাতে জমির খতিয়ান তুলে দেন জেলা প্রশাসক ও প্রকল্প পরিচালক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। 

এ সময় তিনি বলেন, ভূমিহীন পরিবারের মাঝে খাস জমির খতিয়ান বিতরণ এই সরকারের একটি অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার কর্মসূচি। ‘বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার আলোকে চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প নোয়াখালীর প্রত্যন্ত চর এলাকায় ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাসজমি বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ভূমিহীনদেরকে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত প্রতি খণ্ড খাস জমি যথাযথভাবে ব্যবহার ও চাষাবাদ করে সর্বোচ্চ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে নিজ পরিবার ও দেশকে স্বনির্ভর করার আহ্বান জানান। 

উপকারভোগী বিধবা মনোয়ারা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়ি ছিল হাতিয়া। পাঁচবার আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নদীতে বিলীন হয়েছে। আজ ভূমির খতিয়ান পেলাম। এখন আর কেউ আমাকে ভূমিহীন বলবে না। ভূমিহীন থেকে আজ ভূমির মালিক হলাম। শেষ জীবনে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো।

আরেক উপকারভোগী আরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুব সহজে দালাল মুক্ত ভোগান্তিবিহীন খতিয়ান হাতে পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসন এবং সিডিএসপি-ব্রিজিং প্রকল্পসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সুবর্ণচর উপজেলার নির্বাহী অফিসার চৈতী সর্ববিদ্যা বলেন, আমাদের পুনর্বাসিত প্রক্রিয়ায় একজন ভূমিহীন এর খরচ হয়েছে ৭০১ টাকা। আজকে ১০০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমাদের এই উপজেলায় দুই হাজার অসহায় ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সিডিএসপির ভূমি বিষয়ক উপদেষ্টা মো. রেজাউল করিম বলেন, ভূমিহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই, স্বাবলম্বী ও আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার এ খাস জমি ভূমিহীনদের মাঝে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ জমি উত্তরাধিকার সূত্র ব্যতীত অন্যত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। এসব পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ের সমান অংশীদারীত্বের মাধ্যমে এ বন্দোবস্তকৃত ভূমি ব্যবহার করে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ইফাদের মিশন টিম লিডার ডেভিড ডলান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের প্রজেক্টের মিশন হলো ভূমিহীন মানুষকে ভূমির মালিক করা। পর্যায়ক্রমে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও তাদের নিরাপদ বাসস্থানের জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছুই করা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ভূমিহীন শুনানি, কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন সব কাজই স্থানীয় বাজারে করেছি।  এর ফলে ভূমি অফিসে কারও আসার প্রয়োজন হয় নি। সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই করেই এসব খতিয়ান বিতরণ করা হয়েছে।

এসময়  উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প- ব্রিজিং ডিরেক্টর সায়িদ আহমেদ, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অশোক বিক্রম চাকমাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসিব আল আমিন/আরকে