চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ নম্বর ওয়ার্ডের (সদর উপজেলা) পাঁচজন প্রার্থী মিলে পেয়েছেন ৯ ভোট। অথচ ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ভোটার ২০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫৮ জন ও ৪৮ জন নারী ভোটার। এই ওয়ার্ডে মোট ৭ জন প্রার্থী জেলা পরিষদের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র ছিল জেলা শহরের গ্রিন ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়।

বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ১২৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল জলিল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আব্দুল হাকিম হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৭২ ভোট। এই দুইজন ছাড়া বাকি পাঁচজন প্রার্থী মিলে পেয়েছেন মোট ৯ ভোট। এদের মধ্যে মোহা. সেলিম রেজা টিউবওয়েল প্রতীকে ১ ভোট, মো. আবুল কালাম আজাদ তালা প্রতীকে ১ ভোট, মো. জালাল উদ্দিন উটপাখি প্রতীকে ১ ভোট, মো. রফিকুল ইসলাম অটোরিকশা প্রতীকে ২ ভোট ও মো. শহিদুল ইসলাম বক প্রতীকে ৪ ভোট পেয়েছেন।

এবার জেলার ৫টি উপজেলায় ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২০ জন এবং ২টি সংরক্ষিত আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০ জন ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন প্রার্থী পেয়েছেন ১ ভোট করে। এদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের তিন জন ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের একজন। আরেকজন প্রার্থী কোনো ভোটই পাননি। অর্থাৎ তিনি শূন্য ভোট পেয়েছেন। 

এদিকে  নাচোল মহিলা ডিগ্রি কলেজে ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৬৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫২ জন, নারী ভোটার ১৬ জন। ২ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে (নাচোল উপজেলা) মো. রয়েল বিশ্বাস অটোরিকশা প্রতীকে ১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও মো. আনারুল ইসলাম টিউবওয়েল প্রতীকে ১৯ ভোট, মো. তারিক-উজ-জামান সুমন তালা প্রতীকে ৪৮ ভোট পেয়েছেন। তবে এদের মধ্যে রয়েল বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলন করে ভোট না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। 

৩ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে (গোমস্তাপুর উপজেলা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে কবীর আহম্মেদ খান টিউবওয়েল প্রতীকে ৪৭ ভোট, মো. আশরাফুল হক অটোরিকশা প্রতীকে ২৬ ভোট, মো. মোকসেদুর রহমান হাতি প্রতীকে ৪৩ ভোট ও মো. হাবিবুর রহমান তালা প্রতীকে ২ ভোট পেয়েছেন। 

৪ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে (ভোলাহাট উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন ৪ জন। এদের মধ্যে ২ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। এই ওয়ার্ডে মো. কামরুল ইসলাম বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে শূন্য ভোট পেয়েছেন। এছাড়াও মোসা. উম্মে নূরজাহান নিশি তালা প্রতীকে ১৬ ভোট, মোসা. হোসনে আরা হাতি প্রতীকে ২৩ ভোট ও মো. হারুন অর রশিদ টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ ভোট। 

অন্যদিকে ৫ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে (শিবগঞ্জ উপজেলা) মোহা. কামাল উদ্দিন হাতি প্রতীকে ৯১ ভোট ও আব্দুস সালাম তালা প্রতীকে পেয়েছেন ১১৫ ভোট।

১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে ভোটের লড়াই করেছেন ২ জন। মোসা. কাজলেমা বেগম ফুটবল প্রতীকে ২৪ ভোট  ও মোসা. তাসলিমা খাতুন হরিণ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪ ভোট। 

অন্যদিকে ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে মোসা. শাহিদা খাতুন হরিণ প্রতীকে ৩ ভোট, মাইক প্রতীকে শামীমা জাহান সারা ১০৯ ভোট ও ফুটবল প্রতীকে সাবিহা শবনম কেয়া পেয়েছেন ৯২ ভোট। 

এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন। সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের ২টি সংরক্ষিত ও ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোতাওয়াক্কিল রহমান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল জলিল, ২ নম্বর ওয়ার্ডে তারিক-উজ-জামান সুমন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কবির আহমদ খান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোসা. হোসনে আরা, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুস সালাম এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে তাসলিমা খাতুন ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাবিহা শবনম কেয়া।

তিনি জানান, ৫টি সাধারণ ও ২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের জন্য ৫ জন প্রিজাইডিং, ১০ জন সহকারী প্রিজাইডিং এবং ২০ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করেন। তাদেরকে গত ১১ ও ১২ নভেম্বর কীভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে হয়, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৫ কেন্দ্রের জন্য ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৬৫৯ জন। ভোট কেন্দ্র ৫ উপজেলায় ৫টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ছিল ১০টি। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র গ্রিন ভিউ স্কুল, ২ নম্বরের নাচোল মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ৩ নম্বরের রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ, ৪ নম্বরের ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট ইনস্টিটিউট এবং ৫ নম্বরের ভোট কেন্দ্র ছিল শিবগঞ্জ ১২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিনকে আগেই বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

গত (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই হয় ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি হয় ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর।

জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর