ঘড়িতে তখন রাত ৯টা বেজে ৩০ মিনিট। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অপেক্ষা করছেন রোগীরা। চিকিৎসকের কক্ষেও রয়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা। চিকিৎসকের কক্ষের বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। কিছু সময় পর চিকিৎসকের সহকারী রোগী ছাড়া সবাইকে বের হতে বলেন। আর চিকিৎসক সামনে রোগী বসিয়ে রেখে সময় দিচ্ছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিত্র এটি। রোগীকে সামনে বসিয়ে রেখে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে।

হাসপাতালের নোটিশে থাকা তথ্য মতে, প্রতি সপ্তাহে রোববার ও বুধবার দুপুর ২-৩টা থেকে ও রাত ৮-৯টা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা জরুরি বিভাগে অবস্থানরত চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। এর বাইরে হাসপাতালে অবস্থান বা অযথা ঘোরাঘুরি বা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

চিকিৎসা নিতে আসা রবিউল এহসান বলেন, চিকিৎসকের সামনে হাত ভাঙা একজন রোগী বসে আছেন। অথচ তিনি সেই রোগীর চিকিৎসা না দিয়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দিচ্ছেন। তাও আবার রাতে। এটা আসলে একেবারে অনুচিত বলে আমি মনে করছি।

কলেজছাত্রী অনন্যা বলেন, আমার ছোট ভাইকে বিড়াল আঁচড় দিয়েছে। সেজন্য নিয়ে এসেছি। রুমে আরও অনেক রোগীও ছিলেন। সেখানে আমাদের সময় না দিয়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দেওয়া উচিত হয়নি।

জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাখেশ বসাক বলেন, আমি রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এখানে নতুন এসেছি। এখানকার নিয়ম এখনো পুরোপুরি জানা নেই। তবে রোগী বসিয়ে রেখে তাদের সময় দেওয়া ঠিক হয়নি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দেওয়ার নির্দিষ্ট একটি সময় রয়েছে। এর বাইরে সময় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

এম এ সামাদ/এসপি