রংপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী সোহেল রানা শরিফুলকে (৩৩) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোস্তফা কামাল এই রায় দেন। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামি উপস্থিত ছিলেন। 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোহেল রানা রংপুর মহানগরীর ধাপ মোহাম্মদপুর আটিয়াটারী এলাকার বাসিন্দা মৃত আহেদ আলীর ছেলে। ঘটনার প্রায় চার বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিক হাসনাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০১৫ সালে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পারিবারিকভাবে সুলতানা পারভীনকে বিয়ে করেন সোহেল রানা। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য উপহার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র দেন সুজা মিয়া। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে আরও এক লাখ টাকা আনার জন্য সুলতানাকে চাপ দিতে থাকেন সোহেল ও তার পরিবারের লোকজন। সুলতানা এতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেন তারা। 

এক পর্যায়ে বিয়ের ছয় মাস পর সুলতানাকে তার বাবার বাড়িতে রেখে ঢাকায় চলে যান সোহেল। তবে মুঠোফোনে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ২০১৭ সালের ২৭ জুন রাতের খাওয়া শেষে সুজা ও তার মেয়েসহ বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন ভোরে মেয়ে সুলতানাকে ঘরে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকেন সুজা। এ সময় সুলতানার মুঠোফোনও বন্ধ থাকে। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকা সুলতানার মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনরা।

পরে সোহেল রানাসহ তার পরিবারের ৯ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন সুলতানা পারভীনের বাবা সুজা মিয়া। পরবর্তীতে তদন্তে অন্যদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় শুধু সোহেল রানার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি