মিছিলে অংশ নেওয়া স্কুলছাত্র

শিক্ষার্থীদের যে সময়টাতে ক্লাসে থাকার কথা, সেই সময়ে কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে রাজপথে মিছিলে যোগ দিয়েছে তারা। রাজনীতি বোঝার বয়স না হলেও নেতাদের সমর্থন জানাতে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে বিদ্যালয় পড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থী। রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ময়নসিংহে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ মিছিলে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের এমন অংশগ্রহণ। 

তারা মুক্তাগাছার আর কে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মিছিলটিতে অংশ নিতে উপজেলা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর ময়মনসিংহ নগরে এসেছে। শিক্ষকরা বলছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের এ ধরণের অংশগ্রহণ একেবারেই কাম্য নয়। 

জানা গেছে, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহরের দাবিতে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা জাতীয় পার্টি (কাদেরপন্থি)। রোববার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর বুড়াপীর মাজারের প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিকে ঘোষ রোডস্থ প্রেসক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। মিছিলটিতে দেখা যায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। যাদের বয়স ১৪ পেরোয়নি। তাদের পড়নে ছিল স্কুল ড্রেস আর কাঁধে ছিল ব্যাগ।

জাপা নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তির নামে স্লোগান ধরে মিছিল করতে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিছিলটিতে অংশ নিতে তারা উপজেলা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর এসেছে ময়মনসিংহ নগরে এসেছে। এলাকার বড় ভাইরা তাদের মিছিলে নিয়ে এসেছে। 

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য সচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি বলেন, স্কুল-কলেজে যেহেতু ছাত্র রাজনীতি আছে সেহেতু মিছিল মিটিংয়ে তো ছাত্ররা আসবেই। যারা আদর্শিক ছাত্র রাজনীতি করে তাদের গায়ে স্কুলড্রেস নাকি অন্য কিছু আছে, এটা তারা চিন্তা করে না। তারা শুধু নেতার কি সমস্যা এটা নিয়েই চিন্তা করে।  

মুক্তাগাছার আর কে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার স্কুলের ছাত্ররা মিছিলে যাওয়ার ব্যাপারটি আমি আবগত না। যারা মিছিলে গিয়েছে তারা স্কুলে আসেনি। অনেকেই বিভিন্ন পার্টির সাথে যুক্ত থাকে। তাদের ‘বড় ভাই’রা আগের দিনই বলে দেয় পরে তারা স্কুল ফাঁকি দিয়ে মিছিলে যায়। এটা কোনোভাবেই ঠিক কাজ নয়। এরাই একসময় ঝড়ে যায়। নেতারাই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নষ্ট করে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে আমরা ছাত্রদের কাউন্সিলিং করেছি, অভিভাববকদের জানিয়েছি। এটি কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিরোধ করতে হলে শিক্ষক-অভিভাবক ও নেতাদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। 

উবায়দুল হক/আরকে