বিভিন্নস্থানে সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে পলাতক দুই জঙ্গির ছবি

মইনুল হোসেন শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল নামে দুই পলাতক জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দিতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে তাদের ছবি ইমিগ্রেশন কক্ষসহ সীমান্তের বিভিন্নস্থানে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে জঙ্গি সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ভেটেশ্বর গ্রামে। তাই সীমান্তে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। 

এছাড়া বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিটি বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি যেন কোনোভাবেই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে না যেতে পারেন সেজন্য বাড়তি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

জানা গেছে, লালমনিরহাটে কাঁটাতারের বেড়াবিহীন জেলার অরক্ষিত সীমান্তপথ এবং সীমান্ত এলাকাগুলো হয়ে উঠেছে চোরাচালানিদের অভয়ারণ্য। সীমান্ত ঘেষা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় দু’দেশের মানুষ অবাধে যাতায়াত করছে। এতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে সীমান্ত অপরাধপ্রবণতা। সীমান্তবর্তী এ জেলার ২৮৪ কিলোমিটার সীমান্ত পথের ৫৪ কিলোমিটার অংশে কাঁটাতারের বেড়া নেই। এসব স্থানে বিজিবি’র পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি বাড়তি সতর্কতা। তাই যেকোন সময় এসব পথে চলে যেতে পারে সোহেল। সীমান্ত অপরাধ ঠেকাতে মোট সীমান্তে বিজিবির ১৫, ৫১ ও ৬১ ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। যদিও এসব স্থানে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও বিজিবি’র সদস্যরা।

এছাড়াও লালমনিরহাটের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ইউনিয়নের তিনদিক ঘিরেই আছে ভারতের কুচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমা। সেখানে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু’দেশের মানুষ অবাধে অবৈধপথে যাতায়াত করেন। তাই দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা সীমান্তে বিশেষ করে সতর্কতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

বুড়িমারী স্থলবন্দর (ইমিগ্রেশন) পুলিশের কর্মকর্তা মুর হাসান কবির জানান, ওই দুই জঙ্গির ছবি ও ঠিকানা তাদের দেওয়া হয়েছে। তাদের ব্ল্যাক লিস্টেড করা হয়েছে। এছাড়াও স্থলবন্দরসহ সীমান্তে জুড়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। দুই জঙ্গি’র ছবি প্রতিটি কক্ষে সাঁটানো হয়েছে। এই পথে তারা এলেই ধরা পড়বে।

পাটগ্রাম থানার ওসি পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি টহল দিচ্ছে। অবৈধপথে পারাপার রোধে গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছেন। এছাড়াও সাদা পোশাকে মাঠে কাজ করছেন পুলিশ।

এ বিষয় জানতে একাধিকবার লালমনিরহাট পুলিশ সাইফুল ইসলাম ও বিজিবিকে ফোন করলেও তারা কোন বক্তব্য দেননি। 

প্রসঙ্গত, রোববার ঢাকার আদালত থেকে মইনুল হোসেন শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল নামে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তারা বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় এবং জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। জঙ্গি শামীমের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর গ্রামে এবং সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারীর ভেটোশ্বর গ্রামে।

 নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে