চাঁদা না দেওয়ায় পাবনায় আব্দুল করিম প্রামানিক (৬৫) নামে এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনি সরদার নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে শহরতলীর হাজিরহাট পেঁয়াজের আড়তে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল করিম দোগাছী ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। আটককৃত মনি আরিফপুর হাজিরহাট এলাকার বাদশা সরদারের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো হাট শেষে পেঁয়াজের আড়ত বন্ধ করে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আব্দুল করিম। এ সময় স্থানীয় মনি নামে একজন গিয়ে টাকা চাঁদা দাবি করেন। করিম একটু পরে দেওয়ার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে পকেটে থাকা ধারালো ছুরি বের করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ঘটনাস্থলের পাশেই মনি বসে থাকেন। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় হাজিরহাট মোড়ে অভিযুক্তকে বসে থাকতে দেখে তাকে আটক করতে গেলে পুলিশকেও ছুরিকাঘাত করতে উদ্যত হন মনি। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

স্থানীয়রা আরও জানান, এর আগেও হাজিরহাট এলাকায় একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো কিছু প্রভাবশালী মহল মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি দিয়ে করিয়ে থাকেন। এলাকার চাঁদাবাজি ও ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে পূর্ব থেকে হয়ত দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সঠিক তদন্ত করে হত্যার বিচার দাবি করেন তারা।

নিহতের ছেলে মো. ইলিয়াস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। কোনো দিন কারও সঙ্গে বিরোধ করতেন না। আজ সকালেও আমাদের জন্য বাজার করে দিয়েছেন। ছোট ভাইয়ের জন্য একটি শীতের পোশাকও কিনে দিয়েছেন। শুনেছি বিকেল ৪টার দিকে বাবার থেকে মনি নামে একজন চাঁদা দাবি করলে দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। এ সময় বাবাকে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেন মনি। তার বাবাকে হত্যার সঙ্গে পর্দার আড়ালে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের লোকজন জড়িত আছে বলে দাবি করেন তিনি। 

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জুয়েল বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। রাতের মধ্যে ঘটনার মূল কারণ জানা যাবে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।  ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। পর্দার আড়ালের কেউ জড়িত থাকলেও খুঁজে বের করা হবে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে হত্যা করে ঘটনাস্থলেই বসেছিলেন অভিযুক্ত মনি। তিনি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ও মাদকাসক্ত। তাকে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্রুতই হত্যার রহস্য বের করা হবে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর