অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মৃত শ্রমিকদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা

সাভারের আশুলিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে তাজরিন ফ্যাশনের শতাধিক মৃত শ্রমিকদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, শ্রমিক ও আহত-মৃতদের স্বজনরা। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ৮টা থেকে পুড়ে যাওয়া তাজরিন গার্মেন্টসের প্রধান ফটকের সামনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।

তাজরিন ট্রাজেডির ১০ বছর পার হয়েছে। ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা এসে ওই ঘটনায় হারানো শ্রমিকদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানান।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, আমাদের স্লোগান ছিল ‘মৃতদের স্মরণ করো, জীবিতদের জন্য লড়াই করো; দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ আইন বদল এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন চাই’। এসব দাবি নিয়ে আমরা গত ১০ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। 

তিনি বলেন, আজ থেকে দশ বছর আগে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর গার্মেন্টস কারখানার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ট্রাজেডির দিন। ১০ বছর পার হয়েছে মামলায় দীর্ঘসূত্রিতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং স্বজনপ্রীতির দোষে আজও শাস্তি হয়নি তাজরীনের দোষী মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য দোষীরা। উল্লেখযোগ্য কোনো বদল হয়নি ক্ষতিপূরণের আইনে। ক্ষতিগ্রস্তদের হয়নি যথাযথ পুনর্বাসন।

তাসলিমা আখতার বলেন, বাংলাদেশের ৪০ লাখ শ্রমিকের প্রতিনিধি তাজরিনের শ্রমিকরাও। দেশের নাম বাকি সব শ্রমিকের মতো তাজরিন শ্রমিকরাও সারাদুনিয়ায় পরিচিতি করেছিলেন। অথচ মালিক, সরকার আর বায়ারদের অবহেলা এবং অমোনোযোগে প্রাণ হারায় তারা। বিচারহীনতার ১০ বছর বলে দেয় শ্রমিকের জীবন ও স্বপ্নের কোনো মূল্য নেই সরকারের কাছে। রপ্তানী আয়ের শীর্ষখাতের শ্রমিকদের জীবন ও স্বপ্ন, মালিক-সরকার এবং বায়ারদের কাছে স্বস্তা তাজরিনের আগুনে মৃত শ্রমিকরা যেন তার স্বাক্ষ্য দেয়। এ সময় তিনি দোষীদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ আইনের বদল ও ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ পুনর্বাসন দাবি করেন। একইসাথে জীবিত শ্রমিকদের জন্য বাঁচার মতো মজুরি দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১১৪ জন শ্রমিক। আহত হন আরও প্রায় দুই শতাধিক। প্রায় প্রতিবছর নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মাহিদুল মাহিদ/আরকে