সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের কানায়দিয়ায় কপোতাক্ষ নদের ওপর সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকোয় চলাচল করতে হচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষকে। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী।

আজিজুর ইসলাম নামে একজন শিক্ষক জানান, এটি সাতক্ষীরার কানায়দিয়া ও খুলনার কপিলমুনির সংযোগস্থল। এখানে বাঁশের সাঁকোর কারণে লোকজনের চলাচলে খুব অসুবিধা হয়। স্কুল-কলেজ থেকে ফেরার পথে শিক্ষার্থীরা সাঁকো ভেঙে পড়ে গেছে কয়েকবার। এছাড়া সাইকেল, ভ্যান ও মোটরসাইকেল এখান থেকে পড়ে যায় প্রতিনিয়ত। বিকল্প রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকো দিয়েই চলতে হয়। বিশেষ করে রাতে যদি কেউ অসুস্থ হয়, সেক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে মারাত্মক ঝুঁকি নিতে হয়। একজন অন্তঃসত্ত্বা রোগীকে হাসপাতালে নিতে কতটা কষ্ট করতে হয় সেটা এই অঞ্চলের মানুষ ভালো জানেন। তাছাড়া কৃষিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল পারাপারের ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের সকলের দাবি শিগগিরই এখানে একটি বেইলি ব্রিজ করে দেওয়া হোক।

স্কুলছাত্রী ফারজানা বলে, আমরা যখন সাঁকোর ওপর দিয়ে যাযই তখন সাঁকো নড়ে। আমাদের অনেক ভয় হয়। তাছাড়া এখানে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় পার্শ্ববর্তী কপিলমুনি স্কুলে কেউ ভর্তি হতেও চাই না। আমরা এখানে একটি ব্রিজ চাই।

আব্দুল কুদ্দুস নামে এক পথচারী বলেন, দুই দিন আগে একটি মোটরসাইকেল পানিতে পড়ে গেছে। তাছাড়া মা-বোনেরা সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে পারে না। চেয়ারম্যান-মেম্বার অনেক বছর ধরে চেষ্টা করেও এখানে একটি ব্রিজের ব্যবস্থা করতে পারলো না। কারণ এটা দুই জেলার সীমান্তবর্তী স্থান। আমরা সকলে চাই এখানে দ্রুত একটি ব্রিজ করা হোক। 

জালালপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর কানায়দিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম বলেন, কানাইদিয়া-কপিলমুনি আন্তঃজেলার কপোতাক্ষ নদের ওপর একটি ব্রিজের দাবি অনেক বছরের। প্রায় ১০ গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য বিক্রির একমাত্র জায়গা কপিলমুনি। কিন্তু সেখানে যেতে কৃষকদের চরম ভোগান্তি তৈরি হয়। প্রায় প্রতিদিনই বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। কেউ অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিঠু বলেন, এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বাচ্চারা সাঁকো দিয়ে স্কুলে যেতে ভয় পায়। অনেকবার সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর প্রতিশ্রুতি দিয়েও একটি ব্রিজের ব্যবস্থা করতে পারেনি। মূলত এটি আন্তঃজেলা হওয়ার কারণে এখানে ব্রিজের বাস্তবায়ন হয়নি।

সাতক্ষীরা এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুজায়েত হোসেন বলেন, সেখানকার জন্য আন্ডার হান্ড্রেড একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পাঠানো হয়েছে। পাস না হলে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।

সোহাগ হোসেন/এসপি