অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের স্মৃতি রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটির বেহাল দশা। জরাজীর্ণ ভবনের ছাদ থেকে যখন-তখন খসে পড়ছে পলেস্তারা। পিলারে ধরেছে ফাটল। বৃষ্টি হলে জাদুঘরের মধ্যেই চুইয়ে পড়ে পানি। যদিও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বলছে, ভবন সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। ২০২৩ সালের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে।

জানা গেছে, অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের স্মৃতি রক্ষার্থে বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নে তার বসতভিটার ২৭ শতক জমির ওপর ১৯৮২ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প শুরু হয়। জাদুঘরটির দৈর্ঘ্য ৮৩ মিটার এবং প্রস্থ ১৪.৬০ মিটার। ১৯৮৩ সালে জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হয়। চার কক্ষ বিশিষ্ট জাদুঘরটি সাজানো হয় বিরল আলোকচিত্র, শেরে বাংলার ব্যবহৃত আসবাবপত্র, চিঠিপত্র ও শেরে বাংলাকে উপহার হিসেবে পাঠানো সৈয়দ আনিছুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির সুন্দরবন থেকে শিকার করা কুমির দিয়ে।

দর্শনার্থী সাগর বলেন, জাদুঘরটি এই অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শেরে বাংলার রাজনৈতিক ও ব্যক্তি জীবনের তথ্য এখানে এসে দেখা ও জানা যায়। কিন্তু জাদুঘরের ভবনটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। ছাদের অনেক স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে।

আরেক দর্শনার্থী সাবিনা আক্তার বলেন, বেশ কয়েকবার এখানে এসেছি। এখন ভেতরে ঢুকে ভয় লাগছে। কখন ছাদ ভেঙে মাথায় পড়ে। সরকারের উচিত দ্রুত ভবনটি সংস্কার করা।

একেএম আলতাফ নামে আরেকজন বলেন, ৭-৮ মাস আগেই পলেস্তারা খসে পড়ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল দুই এক মাসের মধ্যে সংস্কার করা। তা না করায় হতাশ হয়েছি। শেরে বাংলা এ দেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্য বহুল চর্চা এবং অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তার স্মৃতির স্থাপনায় এত উদাসীনতা মেনে নেওয়া যায় না।

শেরে বাংলা স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর বলরাম দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এপ্রিল মাসে পলেস্তারা খসে পড়েছে। চারটি কক্ষের মধ্যে তিনটি কক্ষেরই একই দশা। এছাড়া পিলারের গোড়ার ফাটল থেকে বৃষ্টির দিনে পানি চুইয়ে পড়ে। এতে দর্শনার্থীদের অসুবিধা হয়। তিনি বলেন, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তারা আশ্বস্ত করেছেন দ্রুতই সংস্কার করা হবে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা-বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পলেস্তারা খসে পড়া এবং পিলার ফেটে পানি পড়ার তথ্য আমি জেনেছি। ভবনটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি এ বছরের মধ্যে সংস্কার শুরু হবে। কোনো কারণে চলতি বছর সংস্কার কাজ না হলেও ২০২৩ সালের মধ্যে ভবনটি পুরোপুরি সংস্কার কাজ শেষ করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি